তখন তাঁরা একে অপরের 'যুযুধান'। ধৈর্যের লড়াই চলছে। তারইমধ্যে রাতের অন্ধকার ধীরে-ধীরে মিলিয়ে গিয়ে আস্তে-আস্তে মাথার উপরে দিনের আলো ফুটছে। আর সেইসময় ফিয়ার্স লেনে জাতীয় সংগীতে গলা মেলালেন আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তার এবং পুলিশকর্মীরা। সকলেই গেয়ে উঠলেন ‘জন গণ মন অধিনায়ক জয় হে’। আর সেটাই যেন এক নয়া সকালের জন্ম দিল। যে সকালে জুনিয়র ডাক্তারদের হাতে জল তুলে দিল পুলিশ। মেনে নিল তাঁদের আর্জি। আর দাবি মেনে নিয়ে জুনিয়র ডাক্তারদের মিছিলকে এগিয়ে গিয়ে নিয়ে কলকাতা পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দেওয়া হল, তখনও জাতীয় সংগীত গাওয়া হল। ব্যাপটিস্ট গির্জার সামনে জুনিয়র ডাক্তারদের মিছিল থেমে যায়। সেখানে জাতীয় সংগীত গেয়ে পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে দেখা করতে যান জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধিরা।
পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ জুনিয়র ডাক্তারদের
যদিও কলকাতা পুলিশের সদর দফতর লালবাজারে কমিশনারের সঙ্গে যে বৈঠক হয়েছে, তাতে সদর্থক কোনও উত্তর মেলেনি বলে দাবি করেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। তাঁরা জানিয়েছেন, বিনীতের ইস্তফা-সহ পাঁচ দফা দাবি নিয়ে একটি স্মারকলিপি তুলে দেওয়া হয়েছে কলকাতা পুলিশ কমিশনারের হাতেই।
আরও পড়ুন: Sandip Ghosh slapped: মার খেলেন সন্দীপ ঘোষ! একসময় ‘বাউন্সার নিয়ে ঘুরতেন’ RG করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ
মেরুদণ্ড ‘উপহার’ জুনিয়র ডাক্তারকে
আর যখন সেই স্মারকলিপি পুলিশ কমিশনারের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছিল, তখন তাঁর সামনের টেবিলেই মেরুদণ্ড রাখা ছিল। যে প্রতীকী মেরুদণ্ডে মালা পরিয়ে লালবাজারে নিয়ে যান জুনিয়র ডাক্তাররা। এমনকী ‘উপহার’ হিসেবে সেটি লালবাজারে রেখে এসেছেন বলেও দাবি করেছেন তাঁরা।
‘একদিনে হবে না, কিন্তু একদিন হবেই…’
তারইমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় পুলিশের একটি ছবি ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। যে ছবিতে দেখা গিয়েছে যে আন্দোলনকারীদের হাতে জল এবং ড্রিঙ্কসের মতো ছোট-ছোট প্যাকেট তুলে দিচ্ছেন এক পুলিশ অফিসার। ওই ছবি দেখে এক নেটিজেন বলেছেন, 'লালবাজারে এখন এক অন্য ছবি..।' অপর এক নেটিজেন বলেছেন, ‘একদিনে হবে না। কিন্তু একদিন হবেই…।’ যদিও কেউ-কেউ এটা বলেও কটাক্ষ করেছেন যে ‘মানতেই হবে। ওরা (পুলিশ) ভালো PR (জনসংযোগ) টিম জোগাড় করেছে।’
মানবন্ধনের সাক্ষী থাকল কলকাতা
জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের মধ্যেই আজ উল্টোডাঙা থেকে পাটুলি পর্যন্ত মানব-শৃঙ্খল তৈরি করেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। তাও মুগ্ধ করেছে নেটিজেনদের। তেমনই একজন বলেন, ‘সাক্ষী থাকলাম এক অভূতপূর্ব মানব-বন্ধনের। পাটুলি থেকে এই মানব-বন্ধন শুরু হয়েছে। কোথায় শেষ হয়েছে, জানি না। কিলোমিটারের পর কিলোমিটার পাশাপাশি দাঁড়িয়ে মানুষ হাতে-হাত রেখে এক সুরে গলা মিলিয়ে বিচার চাইছে। প্রতিবাদের বিভিন্ন রূপ দেখছে এই তিলোত্তমা।’