জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ ছিল ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যে টালি নালা বা আদি গঙ্গা পরিষ্কারের কাজ শেষ করতে হবে। কিন্তু, সেই কাজের অগ্রগতি নিয়ে মোটেও সন্তুষ্ট নয় জাতীয় পরিবেশ আদালত। টালি নালার বর্জ্য ও পলি যে গতিতে পরিষ্কার হওয়া দরকার সেই গতিতে কাজ এগোচ্ছে না বলেই মনে করছে ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইবুন্যাল (এজিটি)। এব্যাপারে অসন্তোষ প্রকাশ করে কলকাতা পুরসভার কাছে হলফনামা চাইল আদালত। কেন কাজে দেরি হচ্ছে সে বিষয়ে অবস্থান জানিয়ে আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা জমা দিতে হবে।
আরও পড়ুন: কুঁদঘাটে পুনর্বাসন দেওয়া হবে টালি নালার দু'ধারের ৪৮ জবরদখলকারীকে
আদি গঙ্গায় পলি জমে বুঝে যাওয়া নিয়ে এবং জলে ভাসমান আবর্জনা নিয়ে পরিবেশ আদালতের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল রাজ্য সরকারকে। এমনকী পরিবেশ আদালত এনিয়ে কলকাতা পুরসভাকে ভর্ৎসনা করেছিল। তারপরেই মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে নগর উন্নয়ন দফতর, কলকাতা পুরসভা, কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথোরিটি সহ একাধিক দফতর ও সংস্থা বৈঠক করে। তাতে সিদ্ধান্ত হয় বেশ কয়েকটি পর্যায়ে আদিগঙ্গা সংস্কার করা হবে। প্রথম পর্যায়ে টালি নালার ৪.৭ কিলোমিটার অংশ পরিষ্কারের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এর জন্য ব্যয় হয়েছে ১১ কোটি ১৬ লক্ষ টাকা।
এখন দ্বিতীয় ধাপের কাজের জন্য তোড়জোড় শুরু করেছে পুরসভা। দ্বিতীয় ধাপে ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫.৩৭ কিলোমিটার পরিষ্কার করা হবে। এরজন্য দরপত্র আহবানের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পুরসভার দাবি, ইতিমধ্যেই টালি নালা পরিষ্কারের ৪০ শতাংশ কাজ হয়ে গিয়েছে। প্রসঙ্গত, এর আগে ২০২২ সালে নভেম্বরে পরিবেশ আদালতের গঠিত বিশেষ কমিটি রিপোর্ট জমা দিয়েছিল। তাতে বলা হয়েছিল যে টালি নালা পরিষ্কারের কাজ চলছে। এমনকী পরিষ্কার করে বর্জ্য রাখার জন্য হিডকো ২৫ কাঠা জমিও বরাদ্দ করেছে। কিন্তু, তারপরেও দেড় বছর হয়ে যাওয়ায় সেই কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই উষ্মা প্রকাশ করেছে জাতীয় পরিবেশ আদালত।
উল্লেখ্য, রাজপুর সোনারপুর, বারুইপুর এবং কলকাতা পুরসভার গড়িয়া-টালিগঞ্জ এলাকায় পানীয় জলের সমস্যা মেটাতে কেএমডি জল প্রকল্প গ্রহণ করেছিল। কিন্তু, সেই কাজে দেরি হওয়ায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছিল জাতীয় পরিবেশ আদালত। সেই সংক্রান্ত মামলাতেই টালি নালা পরিষ্কারে দেরি হচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠে।