একদিকে অশান্তির আবহে যেমন বাংলাদেশে কট্টরপন্থীদের বাড়বাড়ন্ত শুরু হয়েছে, তাদের তরফ থেকে ভারতকে লাগাতারা হুমকি, হুঁশিয়ারি দেওয়া হচ্ছে, তেমনই এপার বাংলার রাজনীতিকদেরও একটা অংশ কট্টরপন্থীদের পালটা হুঁশিয়ার করছেন।
এমন আবহে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন আইএসঅফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী। তাঁর মতে, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্য়ে সম্পর্কের অবনতি হওয়াটা মোটেও কাজের কথা নয়। তাই ভারতীয় রাজনীতিকদের এখন উচিত 'বাংলাদেশকে গালাগালি না করে নিজেদের দায়িত্ব পালন' করা। কারণ, ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্কের অবনতি হওয়ার অর্থ হল - পাকিস্তান ও চিনকে ঝামেলা পাকানোর সুযোগ করে দেওয়া।
ওই দুই দেশই ওঁৎ পেতে রয়েছে, যাতে বাংলাদেশের এই অশান্তির সুযোগ নিয়ে সেদেশে নিজেদের ঘাঁটি পাকা করা যায়। আর পাকিস্তান বা চিন যদি তেমনটা করতে সফল হয়, তাহলে তা ভারতের পক্ষে বিপজ্জনক হতে পারে। এই প্রেক্ষাপটে ভারতীয় রাজনীতিকদের আরও দায়িত্বশীল আচরণ করা উচিত বলে মনে করেন নওশাদ। কিন্তু, সেটা না করে 'কিছু রাজনৈতিক দল যেমন কত বড় হিন্দু প্রেমিক তা প্রমাণে উঠেপড়ে লেগেছে, তেমনই এখন আমাদের মধ্যে কিছু মানুষ কেউ কত বড় দেশপ্রেমিক তা প্রমাণে উঠেপড়ে লেগেছে।'
নওশাদের বার্তা খুবই স্পষ্ট। বাংলাদেশে যে হারে ভারতবিরোধী কার্যকলাপ বেড়ে চলেছে, তাতে যে এপারের মানুষের মধ্যে ক্ষোভ থাকবে, সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু, তার অর্থ এই নয় যে এপারের লোকজনও দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ করবেন। একইসঙ্গে, ভারত সরকারের তরফেও কঠোর পদক্ষেপের দাবি তুলেছেন তিনি।
নওশাদ বলেন, 'আমাদের দেশে তাহলে একটা সার্কুলার দেওয়া হোক না। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক থেকে বলা হোক বাংলাদেশের লোক এখানে চিকিৎসা পাবে না। বাংলাদেশের লোককে আমরা চিকিৎসা দেব না, বাংলাদেশের বই এখানে বিক্রি হবে না। সেগুলো কিন্তু দিচ্ছে না। কারণ ওরা ভাল করে জানে এগুলো করলে দুটো দেশের সম্পর্ক আরও তলানিতে যাবে। নিরাপত্তার দিকে বেশি ক্ষতি হবে ভারতের।'
বাংলাদেশিদের উস্কানিকমূলক মন্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে যে ভারতীয় রাজনীতিকদের গলায় পালটা হুঁশিয়ারির সুর শোনা যাচ্ছে, তাঁদের উদ্দেশ করে নওশাদের বার্তা, 'বাংলাদেশকে গালাগালি না করে নিজের দায়িত্বটা পালন করুন। এই ধরনের মন্তব্যে দু'টো দেশের সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। পাকিস্তান-চিন তো ওঁৎ পেতে বসে আছে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করার জন্য। আর বাংলাদেশে ওরা ঢুকলে ভারতের ক্ষতি হবে। এটা ভাবা দরকার।'