আরজি কর ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার প্রতিবাদে যে জুনিয়র চিকিৎসকরা আন্দোলনের পথে থেকেছেন এবং এ নিয়ে প্রতিবাদ চালিয়ে যাচ্ছেন, সেই 'ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্ট' (ডব্লিউবিজেডিএফ)-এর ওয়েবসাইটটি নাকি আচমকাই কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে! সংবাদমাধ্যমে এই খবর সামনে আসতেই এ নিয়ে নতুন করে কাটাছেঁড়া শুরু হয়ে গিয়েছে। সমালোচনায় সরব হয়েছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। যদিও ডব্লিউবিজেডিএফ-এর তরফে এই ঘটনার অন্য ব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে।
ঘটনা ঠিক কী?
ডব্লিউবিজেডিএফ-এর যে ওয়েবসাইটটি রয়েছে, সেটি হল - www.wbjdf.com - যা কিনা আপাতত আর খুলছে না। গুগলে গিয়ে সার্চ করলে 'মেসেজ' বা বার্তা আসছে - 'This site can’t be reached'!
এই ঘটনা সামনে আসতেই নানা মহলে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে, তাহলে কি আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তাররা তাঁদের ওয়েবসাইটটি বন্ধ করে দিলেন? কিন্তু, এমনটা তাঁরা করবেন কেন?
আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের বক্তব্য কী?
আনন্দবাজার অনলাইন-এ প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, এই বিষয়টি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন, সংশ্লিষ্ট ফ্রন্টের সদস্য অনিকেত মাহাতো। তাঁকে উদ্ধৃত করে সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, 'ওয়েবসাইট আন্ডারকনস্ট্রাকশন। সেটি এখনও লঞ্চ করেনি। এখনও কাজ চলছে। তার জন্য কখনও চালু থাকছে, কখনও বন্ধ থাকছে। ওয়েবসাইট বন্ধ করা হয়নি।'
লক্ষ্যণীয় বিষয় হল, এই ঘটনা পুলিশেরও নজর এড়ায়নি। এমনকী, তারা ইতিমধ্যেই এ নিয়ে খোঁজখবর করতে শুরু করে দিয়েছে। এই প্রসঙ্গে অনিকেতের বক্তব্য হল, 'বিধাননগর পুলিশ একটি নোটিশ পাঠিয়ে জানতে চায়, কেন ওয়েবসাইট হঠাৎ বন্ধ করা হয়েছে? পুলিশকে সেই নোটিশের জবাবও দেওয়া হয়েছে। তাদের জানানো হয়েছে, আমাদের কাজ চলছে। টেকনিক্যাল টিম বিষয়টি দেখছে। মেরামতির কাজ চলছে। ওয়েবসাইট বন্ধ হয়নি। তদন্তে যা যা সহযোগিতা করার দরকার, সবরকমভাবেই তা করা হবে।'
কুণাল ঘোষের বক্তব্য:
খুব স্বাভাবিকভাবেই এ নিয়ে সরব হয়েছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব। তারা অনেক আগে থেকেই বলছে, আরজি করের ঘটনায় নির্যাতিতা নিহত তরুণীর প্রতি আমজনতার যে আবেগ জড়িয়ে গিয়েছে, তা অনৈতিকভাবে ব্যবহার করার অপচেষ্টা করছেন আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশ। এমনকী, আন্দোলনের নামে কোটি কোটি টাকা তুলে তা অপব্যবহারেরও অভিযোগ করা হয়েছে।
এই প্রেক্ষাপটে ওয়েবসাইট বন্ধ হওয়া নিয়ে নির্দিষ্ট কয়েকটি প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। যেমন -
'নির্যাতিতার আবেগ ব্যবহার করে প্রচুর টাকা তুলেছিল জুনিয়র ডাক্তারদের সংগঠন। সেই টাকা গেল কোথায়? আইনজীবীরা বলছেন, তাঁরা কেউ পয়সা নিয়ে মামলা লড়েননি। আবার অন্যদিকে বলা হচ্ছে, আইনি প্রক্রিয়ায় পয়সা খরচ হচ্ছে। দু'টো কী করে একসঙ্গে হতে পারে?'
তৃণমূল নেতার আরও জিজ্ঞাস্য হল - 'কী করে ওঁদের অ্যাকাউন্ট থেকে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থার অ্যাকাউন্টে টাকা গেল? এই প্রশ্ন যখন উঠছে, তখন দেখা গেল ওয়েবসাইট উধাও।' কুণাল ঘোষ মনে করেন, এই গোটা ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।
প্রসঙ্গত, আরজি কর আন্দোলনের জন্য অনুদান সংগ্রহ করা নিয়ে তথ্য জানতে ইতিমধ্যেই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত সাতজন জুনিয়র চিকিৎসককে তলব করে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল বিধাননগর থানার পুলিশ।