সব কিছুতেই তিনি যেন ভাবলেশহীন, নির্বিকার। ইডি-ই হোক কিংবা সিবিআইয়ের হানা যাই হোক না কেন। সবক্ষেত্রেই সংবাদমাধ্যমের সামনে একেবারে হাসিমুখে থাকেন কালীঘাটের কাকু। যেন কিছুই হয়নি। কিন্তু সেই কালীঘাটের কাকুর সম্পর্কে এবার একেবারে বিস্ফোরক অভিযোগ।
আসল নাম সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। তিনিই বিগতদিনে জানিয়েছিলেন আমার সাহেবের নাম অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়। সেই কালীঘাটের কাকু সম্পর্কে এবার নয়া তথ্য এসেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কাছে।
সূত্রের খবর, কালীঘাটের কাকুর সঙ্গে যোগাযোগ থাকতে পারে এমন তিনটি সংস্থায় হানা দিয়েছিলেন ইডির গোয়েন্দারা। আর সেখানে গিয়ে হতবাক তদন্তকারী আধিকারিকরা। মূলত এই তিন সংস্থার কাজকর্ম নিয়ে কিছুটা সন্দেহ দানা বেঁধেছে তদন্তকারীদের মধ্যে। শনিবার দুপুরে ওই সংস্থার অফিসে হানা দিয়েছিলেন গোয়েন্দারা। এরপর সোমবার একটি সংস্থার আধিকারিককে ডেকে পাঠান তদন্তকারীরা। মূলত সন্দেহ করা হচ্ছে কালো টাকা সাদা করার কাজ করা হত এই সংস্থার মাধ্যমে। কিন্তু এখানেই প্রশ্ন উঠছে সেটা কীভাবে? কাদের টাকা সাদা করা হত এখানে? আর সেই কালো টাকা সাদা করার কাজে কি মিডলম্যান হিসাবে কাজ করতেন কালীঘাটের কাকু?
তবে কালীঘাটের কাকুর ঠিকানায় তল্লাশি চালিয়ে ঠিক কী পাওয়া গিয়েছে তা নিয়ে বিশদে কিছু জানা যায়নি। এদিকে কালীঘাটের কাকু আগেই জানিয়েছিলেন তিনি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের সংস্থায় কাজ করেন। এমনকী ইডি সিবিআই যে অভিষেককে ছুঁতে পারবেন না এনিয়েও হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তিনি। তবে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার জেরার মুখে পড়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়।
কালীঘাটের কাকু আগেই জানিয়েছিলেন, আমার সাহেবকে ছুঁতে না পেরে, আমি পর্যন্ত এসে থেমে যাচ্ছে। কে আপনার সাহেব? প্রশ্ন করেছিল সংবাদমাধ্য়ম। 'কালীঘাটের কাকুর' উত্তর ছিল, আমার সাহেব অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্যায়। ২০০৯ সাল থেকে অভিষেকের অফিসে চাকরি করি। এর সঙ্গেই তিনি জানিয়েছিলেন, কুন্তল যেদিন বলবে টাকা দিয়েছি সেদিন জবাব দেব।
এদিকে সূত্রের খবর,ওই সব সংস্থায় কোথা থেকে টাকা আসত তা নিয়ে খোঁজখবর করছে তদন্তকারী সংস্থা। সেখানে কাদের টাকা আসত, কোনও প্রভাবশালীর টাকা সেখানে আসত কি না সেব্যাপারে খোঁজখবর নিচ্ছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা।
এদিকে এসবের মধ্যে আইনজীবী তথা কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি আদালতে জানিয়েছেন, আদালত রক্ষাকবচ না দিলে গ্রেফতার হতে পারেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়। এরপর থেকেই নতুন করে জল্পনা ছড়াতে শুরু করেছে। তবে শুক্রবার পর্যন্ত কোনও রক্ষাকবচ দিতে চায়নি আদালত। তার মধ্য়ে অভিষেকের অফিসের কর্মচারী কালীঘাটের কাকুকে নিয়ে নয়া অভিযোগ। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি ক্রমেই ঘোরালো হয়ে উঠছে।