খাস কলকাতায় এবার অপহরণের অভিযোগ উঠল। শুধু তাই নয়, অপহরণের পর মুক্তিপণ চেয়ে আসে ফোন। টেনশন শুরু হয়ে যায় যুবকের বাড়িতে। তিলজলা থানা এলাকার ঘটনায় নির্দিষ্ট অভিযোগ পেয়ে তিলজলা থানার পুলিশ এবং লালবাজারের গুন্ডা দমন শাখার যৌথ উদ্যোগে ফিল্মি কায়দায় উদ্ধার করা হয় অপহৃত যুবককে। আর এই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে ৮জনকে। একেবারে নিউ মার্কেট থেকে অপহরণ করা হয় ওই যুবককে। তারপর মুকুন্দপুরের একটি হোটেলে রাখা হয়। সেখান থেকে ওই যুবকের বাড়িতে ফোন করে ১২ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ চায় অভিযুক্তরা। ঋণ আদায়ের জন্যই অপহরণের ছক কষেছিল অভিযুক্তরা বলে অভিযোগ।
এদিকে পুলিশ সূত্রে খবর, গত ২২ জুন তিলজলা থানায় অপহরণের অভিযোগ দায়ের করা হয়। অপহৃত যুবকের বাবার অভিযোগ, ছেলে ২১ জুন সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বের হয়। কিন্তু ২২ জুন বিকেল পর্যন্ত আসেনি। তারপর অজানা নম্বর থেকে ফোন করে ১২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। টাকা না দিলে যুবকের প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয়। এই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামে পুলিশ। আর গোপন সূত্রে খবর পেয়ে, মুকুন্দপুর এলাকার একটি হোটেল হানা দেয়। সেখান থেকে অপহৃত যুবককে উদ্ধার করা হয়। যদিও বিষয়টি খুব সহজ ছিল না।
আরও পড়ুন: বিশেষভাবে সক্ষম অফিসারকে পদোন্নতি নিয়ে হেনস্থা ব্যাঙ্কের, জরিমানা করল কলকাতা হাইকোর্ট
অন্যদিকে তদন্তে নেমে পুলিশ নানারকম সূত্র পেতে থাকে। নরেন্দ্রপুরে অপহৃত যুবক ইকবালের একটি কলসেন্টার ছিল। পুলিশ সেখানে হানা দেয়। পরে সেটা বন্ধ হয়ে যায়। অভিযুক্ত ডেভিড ওরফে গৈরিক মুখোপাধ্যায়ের থেকে ১৬ লক্ষ টাকা ঋণ নেন ইকবাল। কিন্তু কলসেন্টার বন্ধ হওয়ায় সে টাকা শোধ দিতে পারেননি। কিন্তু ১৬ লক্ষ টাকা আদায় করতেই ইকবালকে অপহরণ করার ছক কষে অভিযুক্ত ডেভিড। সঙ্গে ছিল আরও সাঙ্গপাঙ্গ। তিলজলা থানা ও লালবাজারের গুন্ডা দমন শাখার যৌথ উদ্যোগে মোট ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতরা হল— বিবেক আগরওয়াল, আশুতোষ রায়, সুরজ কুমার সিং, রোহিত রায়, মহম্মদ আলকামা, আমন কুমার গুপ্তা, কুন্দন শ্রীবাস্তব ও ডেভিড।
এছাড়া পুলিশ সূত্রে খবর, প্রথমে ডেভিড ও বিবেককে গ্রেফতার করা হয়। তাদের জেরা করে বাকি ৬ জনকে গ্রেফতার পরে পুলিশ। খুব ঠাণ্ডা মাথায় পরিকল্পনা করে যুবককে অপহরণকারীদের কাছ থেকে ছাড়ানো হয়। কলকাতার নিউ মার্কেট এলাকা থেকে অপহরণ করা হয় ওই ব্যক্তিকে। কসবা ও নরেন্দ্রপুরের বেশ কয়েকটি জায়গায় ঘোরানো হয় তাঁকে। তারপর মুক্তিপণ চেয়ে ফোন করা হয় ইকবালের বাড়িতে। আর মুকুন্দপুর এলাকার এক হোটেলে আটকে রাখা হয়। সেখান থেকেই ইকবালকে উদ্ধার করে পুলিশ। তিলজলা থানার পুলিশ এবং লালবাজারের অ্যান্টি রাউডি স্কোয়াডের যৌথ অভিযানে উদ্ধার হয় যুবক ইকবাল।