নানা জেলা থেকে মানুষ শহর কলকাতায় আসে কাজের জন্য। আবার কেউ কেউ এসে থাকেন কাজ খোঁজার জন্য। তাই শহরে মানুষের ভিড় বেড়েই চলেছে। কিন্তু এই সব করতে গিয়ে রাত কাটাতে হয় খোলা আকাশের নীচে। সবাই তো বাড়ি ভাড়া নিতে পারেন না। এই কারণে বাড়ছে আশ্রয়হীন মানুষের সংখ্যা শহরে। তখন একপ্রকার বাধ্য হয়েই ফুটপাথে অথবা বাস স্ট্যান্ডের শেডে এবং রেল স্টেশনে রাত কাটাচ্ছেন অনেককে। শীত–গ্রীষ্ম–বর্ষা সব ঋতুতেই এভাবেই আশ্রয়হীন হয়েই জীবন কাটাতে হচ্ছে মানুষজনকে। তবে এমন মানুষের জন্য শহরে নাইট শেল্টার রয়েছে কলকাতা পুরসভার। কিন্তু এই নাইট শেল্টার সংখ্যা কম। এই নাইট শেল্টার মহানগরীতে আরও বাড়ানো হোক এবার চাইছে কলকাতা পুলিশ।
এই নাইট শেল্টার বাড়লেই সমস্যা মিটবে বলে মনে করছে কলকাতা পুলিশ। তাই এই বিষয়টি নিয়ে কলকাতা পুরসভাকে চিঠি দিয়েছে লালবাজার। পুলিশ সূত্রে খবর, শহরে এই নাইট শেল্টার নতুন করে আরও অন্তত ২৫টি জায়গায় গড়ে তোলা হলে মানুষের সমস্যা মিটবে। আর নাইট শেল্টার আরও গড়ে তোলার আর্জি জানানো হয়েছে ওই চিঠিতে। শহরের কোথায় মানুষ বেশি খোলা আকাশের নীচে থাকে? পুলিশ খোঁজ নিয়ে দেখেছে কলকাতা জুড়ে নাইট শেল্টার চাইছে মানুষ। আর তার একটি রিপোর্টও তৈরি করেছে লালবাজার। এই জায়গাগুলি হল—শিয়ালদা, হাতিবাগান, ডালহৌসি, গড়িয়াহাট, নিউ আলিপুর, নিউ মার্কেট, মৌলালি, শ্যামবাজার, কাশীপুর, চেতলা, ভবানীপুর, পাক সার্কাস, এন্টালি, ট্যাংরা ও বেলেঘাটা।
আরও পড়ুন: খরচ মাত্র ৩৫ পয়সা, রেল দুর্ঘটনা ঘটলে যাত্রীরা পাবেন ১০ লাখ টাকা, বিমা আইআরসিটিসি’র
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে কলকাতা পুরসভা শহরের ফুটপাথে মানুষের থাকা নিয়ে একটা সমীক্ষা করেছিল। তাতে তিলোত্তমার ১৬টি বরোকে পাঁচটি জোনে ভাগ করা হয়। প্রথম সমীক্ষায় উঠে আসে ফুটপাথে বসবাস করছে ৬৪২৯ জন মানুষ। শেষ সমীক্ষায় সেটা বেড়ে দাঁড়ায় ৭২৭৬ জনে। এখন ওই সংখ্যা ছাড়িয়ে ১০ হাজারের কাছে পৌঁছেছে বলে লালবাজার সূত্রে খবর। সেখানে কলকাতায় নাইট শেল্টার আছে মোটে ৪৫টি। তাতে থাকতে পারেন ৪২০০ জন। তবে এই নাইট শেল্টার তৈরি করার জায়গার অভাব নিয়ে চিন্তায় পুরকর্তারা।
কিন্তু তাহলে কি সমস্যা মিটবে না? এই সমস্যা মেটাতে কলকাতা পুরসভা অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে। একাধিক সরকারি দফতরকে তাঁদের হাতে থাকা ফাঁকা জমি কলকাতা পুরসভাকে দিতে বলেছে। যাতে তাতে নাইট শেল্টার গড়ে তোলা যায়। এই প্রস্তাবে সেই সব দফতর রাজি হলে সমস্যা মেটার রাস্তা খুলে যাবে। কলকাতা পুরসভা কর্তৃপক্ষ রেল এবং বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছেও জমি চাওয়া হয়েছে। যাতে নাইট শেল্টার গড়ে তোলা যায়। এই বিষয়ে মেয়র পারিষদ (বস্তি) স্বপন সমাদ্দার বলেন, ‘শহরে নাইট শেল্টারের সংখ্যা পর্যাপ্ত নয় ঠিকই। কিন্তু জমি পেলে তবেই নতুন নাইট শেল্টার গড়ার কাজ শুরু হবে।’