সম্প্রতি একাধিক জায়গায় তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল প্রকাশ্যে এসেছে। এবার তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল গড়াল হাইকোর্ট পর্যন্ত। মুর্শিদাবাদের মহিষাস্থলি গ্রামপঞ্চায়েতের তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নিতি-সহ একাধিক অভিয়োগে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিলেন তৃণমূলেরই পঞ্চায়েত সদস্যরা। এই দ্বন্দ্ব হাইকোর্ট পর্যন্ত গড়ালে, পঞ্চায়েত সদস্যদের আইন মোতাবেক অনাস্থা প্রস্তাব আনার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
ভগবানগোলার বিডিওকে ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্য আইনানুগভাবে বিষয়টি নিষ্পত্তি করারও নির্দেশ দিয়েছে আদালত। প্রয়োজনে পুলিশি সাহায্যও নিতে পারবেন মামলাকারিরা। যাতে কোনও পক্ষের তরফে অযথা সময় নষ্ট না-হয়, তাও দেখতে বলেছে আদালত। এই নির্দেশ দিয়েছে বিচারপতি শম্পা সরকারের সিঙ্গেল বেঞ্চ।
এর আগে এই মামলায় পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে ‘অভিযোগের’ ভিত্তিতে আনা অনাস্থা প্রস্তাবের নোটিসে স্থগিতাদেশ দিয়েছিল বিচারপতি সব্যসাচি ভট্টাচার্যের সিঙ্গেল বেঞ্চ। পরে মামলাটি যায় বিচারপতি শম্পা সরকারের এজলাসে। এদিন মামলার শুনানিতে আদালত নিজের পর্যবেক্ষণে জানিয়েছে, 'পঞ্চায়েতে প্রধানের মতো নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির মূল কাজ হল পঞ্চায়েতের সাংবিধানিক কাজগুলোকে স্বচ্ছভাবে করা। সেখানে যদি কোনও প্রধান তাঁর আস্থা বজায় রাখতে না পারেন, সেক্ষেত্রে একদিনও তিনি সেই দফতরে থাকতে পারবেন না। সেক্ষেত্রে পঞ্চায়েত সদস্যদের অভিযোগের ভিত্তিতে নয়, ফের নতুনভাবে আইনি পদ্ধতিতে অনাস্থা প্রস্তাব আনতে হবে। তবে পঞ্চায়েত প্রধানের যোগ্যতা নিয়ে আদালত কোনও প্রশ্ন তুলতে পারে না। উনি আর দফতরে আসবেন কি না-তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে।'
মামলাকারিদের পক্ষের আইনজীবী আলি আহসান আলমগির এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘মুর্শিদাবাদের মহিষাস্থলি গ্রামপঞ্চায়েতের প্রধান যমুনা রবিদাসের বিরুদ্ধে দুর্নিতি, স্বজনপোষণ ও একনায়কতন্ত্রের অভিযোগে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিলেন পঞ্চায়েত সদস্যরা। ওই পঞ্চায়েতে ২৮ জন সদস্যের মধ্যে ২৭ জনই তৃণমূলের সদস্য। বাকি একজন সিপিএমের সদস্য।’ আইনজীবী আরও বলেন, ‘এঁদের মধ্যে ১৫ জন সদস্য প্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন। সদস্যদের অনাস্থার বিরুদ্ধে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন পঞ্চায়েত প্রধান।
তবে অভিযোগের ভিত্তিতে আনা প্রস্তাব স্থগিত করে দেওয়ায় হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে আমরা নতুন করে আইন মেনে অনাস্থার নোটিস করেছি।’