বাড়ছে না বাসের ভাড়া। নিজেদের অবস্থান থেকে সরে এসে জানালেন পশ্চিমবঙ্গের পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। সংবাদসংস্থা PTI-তে তিনি জানিয়েছেন, বেসরকারি বাসমালির সংগঠনগুলির বাসভাড়া বৃদ্ধির প্রস্তাব গ্রহণ করবে না রাজ্য সরকার।
শনিবার তিনি জানান, ‘উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মানুষের ওপর আর চাপ বাড়ুক তা চান না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই গণপরিবহণের ভাড়া বৃদ্ধির প্রস্তাব মানা হবে না।’
সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, কলকাতা ও রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় পর্যাপ্ত পরিমাণে সরকারি বাস চালানো হবে। রেড ও অরেঞ্জ জোনে সকাল ৭টা থেকে সন্ধে ৭টা পর্যন্ত চলবে বাস। গ্রিন জোনে ২৪ ঘণ্টা চালু থাকবে পরিষেবা। ইতিমধ্যে কলকাতার ১৫টি রুটে সরকারি বাস চলাচল শুরু হয়েছে। বাসের সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী। ট্রাম ও ফেরি চলাচল নিয়েও দ্রুত সিদ্ধান্ত হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
চলতি সপ্তাহেই নবান্নে পরিবহণ দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক হয় বেসরকারি বাসমালিকদের সংগঠন জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেটের। সেখানে সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং মেনে বাস চালাতে গেলে কলকাতায় বাসের ন্যূনতম ভাড়া ২০ টাকা করতে হবে বলে দাবি জানান তাঁরা। পরের প্রতি ধাপে ৫ টাকা করে ভাড়া বাড়ানোর প্রস্তাব দেয় সংগঠনটি। যার ফলে ৩ গুণ ভাড়া বৃদ্ধি হওয়ার কথা ছিল বাসে। সোশ্যাল ডিসট্যান্সিংয়ের বিধি অনুসারে বাসে ২০ জনের বেশি যাত্রী তোলা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার।
বৈঠক শেষে সংগঠনটির পক্ষে জানানো হয়, তাদের প্রস্তাব মেনে নিয়েছে পরিবহণ দফতর।
বলে রাখি, চলতি সপ্তাহে নবান্নে এক সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘বাসের ভাড়া ঠিক করবেন বাস মালিকরা। যে চড়তে পারবে, চড়বে। যে চড়তে পারবে না, চড়বে না।’ মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের পরদিনই ভাড়াবৃদ্ধি নিয়ে বৈঠক হয় নবান্নে।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য ও তার পরদিন অস্বাভাবিক ভাড়াবৃদ্ধিতে চরম প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছিল জনমানসে। মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যকে হাতিয়ার করে প্রচারেও নেমে পড়েছিল বিরোধীরা। মমতার জনদরদী মুখোস খসে পড়েছে বলে দাবি করতে থাকে বিজেপি।
রাজ্য সরকার ভাড়াবৃদ্ধির প্রস্তব না মানায় বেসরকারি বাস রাস্তায় নামা নিয়ে ফের অনিশ্চয়তা দেখা দিল। কারণ ভাড়া না বাড়ালে সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং মেনে ২০ জন যাত্রী নিয়ে বাস চালানো সম্ভব নয় বলে আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন বাসমালিকরা। মন্ত্রীমশাই ভাড়াবৃদ্ধির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের পর তাঁরা কী করেন সেটাই দেখার।