আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে শো-কজ করেছে কেন্দ্র? সোমবার দুপুরের পর থেকেই একটি অংশের তরফে এমনই দাবি করা হচ্ছিল। যদিও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, রাজ্যের সদ্য প্রাক্তন মুখ্যসচিবের কাছে কারণ দর্শানোর কোনও চিঠি আসেনি। যিনি নিজেই অবসর নিতে চেয়েছেন বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
সোমবার বিকেলে নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে শো-কজ চিঠি নিয়ে মমতা বলেন, ‘এসব তথ্য আমাদের কাছে নেই। যিনি ইতিমধ্যে অবসর নিয়েছেন, তাঁর ক্ষেত্রে এগুলি মনে হয় আইনত প্রয়োজ্য নয়। এসব কোনও চিঠি আমাদের কাছে আসেনি। আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে একটাই চিঠি এসেছে। সেটার বিষয়ে আপনাদের বলে দিলাম।’
সেইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, সোমবারই অবসর নিতে চেয়ে আর্জি জানান আলাপনবাবু। মমতার কথায়, ‘ইচ্ছা করলে আমি কিন্তু ওকে এক্সটেনশন দিয়ে জোর করে বলতে পারতাম যে তুমি থেকে যাও। তাতেও কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার কিছু করতে পারত না। আমি সেটা করিনি। আমার কাছে যখন ও আমাদের অনুমতি চেয়েছে, ম্যাডাম, আজ আমার শেষদিন। দয়া করে আজ আমায় অবসর নিতে দিন। আমি ওকে অবসর নেওয়ার অনুমতি দিয়েছি।’
কলাইকুন্ডায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াস নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পর্যালোচনা বৈঠকের পর থেকে আলাপনের বদলি নিয়ে কেন্দ্র এবং রাজ্যের সংঘাত চরমে উঠেছে। রাজ্যের আর্জি মেনে আরও তিন মাস মুখ্যসচিব পদে রাখার ছাড়পত্র দিয়েও আলাপনকে ডেকে পাঠায় কেন্দ্র। সোমবার তাঁকে তলব করা হয়েছিল। তা নিয়ে প্রথম থেকেই সরব হন মমতা। আলাপনকে রাজ্যের মুখ্যসচিব পদে রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠিও পাঠান। সেই পরিস্থিতিতে নয়াদিল্লিতে যাননি আলাপন। বরং নিজের কর্মজীবনের শেষদিনে নবান্নেই আসেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন।
সেই বৈঠকের পর কিছুক্ষণ পরই নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে রীতিমতো ক্ষুব্ধ মমতা জানান, রাজ্যের আবেদনের পর বিকেল পাঁচটার কিছুটা আগে কেন্দ্রের তরফে আলাপনকে চিঠি পাঠানো হয়। আগামিকাল সকাল ১০ টার মধ্যে আলাপনকে নর্থ ব্লকে কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কী কারণে ডাকা হয়েছে, সে বিষয়ে চিঠিতে কোনও উচ্চবাচ্য করা হয়নি। সেইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী জানান, আগামিকাল (১ জুন) থেকে তিন বছরের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করবেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়।