অযোধ্যায় রাম মন্দিরের উদ্বোধনের দিন তৃণমূলের ‘সংহতি যাত্রা’র অনুমতি দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার মামলাকারী শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্য শুনে মিছিলের অনুমতি দিলেও বেশ কিছু শর্ত দেয় কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। আদালতের নির্দেশের পর মিছিলে আর কোনও বাধা রইল না বলে মনে করা হচ্ছে।
তৃণমূলের সংহতি যাত্রা পিছিয়ে দেওয়ার দাবিতে বুধবার কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটির শুনানি হয়। সেখানে শুভেন্দুবাবুর আইনজীবী সৌম্য মজুমদার বলেন, ‘২২ জানুয়ারি রাম মন্দিরের উদ্বোধনের পালটা কর্মসূচি হিসাবে এই মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছে। ব্লকে ব্লকে এই মিছিল হলে হিংসা ছড়াতে পারে। রাম নবমীতে রাজ্যে হিংসার ছবি দেখা গিয়েছে। তেমন হিংসার আশঙ্কা করা হচ্ছে।’
এর পর প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, বেশ কিছু শর্ত মেনে ২২ জানুয়ারি মিছিল করা যাবে। তবে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়াতে পারে এমন কোনও মন্তব্য করা যাবে না। শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে মিছিল করতে হবে। মানতে হবে শব্দবিধি। তবে মিছিল থেকে কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হলে তার দায় নিতে হবে তৃণমূলকে। সঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের আবেদনও খারিজ করে দিয়েছে আদালত।
মঙ্গলবার নবান্ন থেকে রাম মন্দির উদ্বোধনের দিন তৃণমূলের পালটা কর্মসূচি ঘোষণা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আপনারা আমাকে বারবার জিজ্ঞাসা করছেন বিভিন্ন মন্দির নিয়ে। আমি বার বার বলেছি ধর্ম যার যার আপনার, উৎসব কিন্তু সবার। ২২ জানুয়ারি আমি নিজে দলীয় ভাবে একটা ব়্যালি করব। আমি প্রথমে নিজে কালী মন্দিরে যাব। ওটা সবাই যাবে না। আমি মা কালীকে পুজো দিয়ে হাজরা থেকে সর্বধর্মের মানুষকে নিয়ে মিছিল করে পার্ক সার্কাস ময়দানে গিয়ে আমরা একটা মিটিং করব। মা কালীকে ছুঁয়ে, মন্দির – মসজিদ – গুরুদ্বার, ওখানে অনেক গীর্জাও আছে সব কিছুকে ছুঁয়ে সব ধর্মের মানুষকে নিয়ে আমরা একটা ব়্যালি করব। আমরা তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে মিছিলটা করব। শুভানুধ্যায়ীরা আসতে পারেন সংহতি মিছিলে। এছাড়া প্রতিটা জেলায় ব্লকে ব্লকে ২২ জানুয়ারি বেলা ৩টায় সম্প্রীতি মিছিল হবে সবাইকে নিয়ে’।
তৃণমূলের এই মিছিলের জেরে রাজ্যের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, এই আশঙ্কার কথা জানিয়ে বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সঙ্গে রাজ্যের স্পর্শকাতর এলাকাগুলিতে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের আবেদন জানান তিনি।