একাই স্কুল আগলে বসে রয়েছেন শিক্ষিকা। স্কুলে আর কোনও শিক্ষক, শিক্ষিকা নেই। এই পরিস্থিতিতে শিক্ষক নিয়োগ করে পড়ুয়াদের স্কুলে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় রাজ্য শিক্ষা দফতরকে এই আদেশ দিয়েছেন। স্কুলকে পুনরুজ্জীবনের জন্য কী ব্যবস্থা হল তা এক মাসের মধ্যে শিক্ষা দফতরকে জানাতে হবে বলে আদালত জানিয়েছে। মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ২৩ জুন।
যে স্কুলকে কেন্দ্র করে আদালতে এই মামলাটি হয়েছে, সেটি উত্তর ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জে। স্কুলের নাম মাধবকাটি রমাপুর জুনিয়র হাই স্কুল। ২০০৯ সালে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। এই স্কুলে পঞ্চম শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয়। গত কয়েক বছরে এই স্কুলে পড়ুয়াদের সংখ্যা কমতে থাকে। গত তিন বছর এই চারটি শ্রেণিতে একাই ক্লাস নিচ্ছিলেন ইতিহাসের শিক্ষিকা সুস্মিতা মিত্র। সম্প্রতি তিনি বদলি চান। কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষ তাতে রাজি হননি। এরপরই আদালতের দ্বারস্থ হন ওই শিক্ষিকা। কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এই বিষয়ে পর্যবেক্ষণে জানান, যেহেতু ওই স্কুলে কোনও শিক্ষক নেই, তাই ওই শিক্ষিকাকে সেখানে আটকে রাখার কোনও প্রয়োজন নেই। তবে বিচারপতি জানিয়েছেন, শিক্ষক শব্দের দুটি মানে হয়। এক, যিনি ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষাদান করেন, তিনি একজন শিক্ষক। দুই, খাতায় কলমে শিক্ষক অর্থাৎ শিক্ষাদানের কাজে তিনি নিযুক্ত নন। ওই শিক্ষিকার ক্ষেত্রে দ্বিতীয়টিই প্রযোজ্য।
একইসঙ্গে হাই কোর্টের তরফে স্কুল পর্যবেক্ষকের কাছে জানতে চাওয়া হয়, স্কুল বাঁচাতে কী পদক্ষেপ করা হয়েছে। স্কুলের সাব ইনস্পেকটর জানান, এর আগে শিক্ষক নিয়োগের জন্য বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কেউ আগ্রহ দেখাননি। ফলে শিক্ষকের অভাবে স্কুল ধুঁকছে। আগামী বছর ১৪ জন পড়ুয়াকে ভর্তি করানো হবে বলে জানানো হয়। কিন্তু এই উত্তর আদালতকে সন্তুষ্ট করতে পারেনি। বিচারপতি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, আগামী এক মাসের মধ্যে স্কুলের পুনরুজ্জীবনের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সেটি রিপোর্ট আকারে জানাতে হবে।