নবান্নের বৈঠকে চা খেতে বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে কয়েকজন সতীর্থ আমরণ অনশন করছেন বলে মুখ্যমন্ত্রীর সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন জুনিয়র ডাক্তাররা। আর তারপর মুখ্যমন্ত্রী যে উত্তর দেন, তাতে তৃণমূল কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠনের নেতা-নেত্রীরা বেশ খুশি হয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী যা বলেছেন, সেই অংশের ভিডিয়ো পোস্ট করে তাঁরা বলতে শুরু করেছেন যে মুখ্যমন্ত্রী পুরো ‘লাইমলাইট’ কেড়ে নিয়েছেন। আর তাঁদের সেই ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে।
কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী ঠিক কী বলেছেন?
সোমবার নবান্নে মুখ্যসচিব মনোজ পন্ত, স্বরাষ্ট্রসচিব নন্দিনী চক্রবর্তী এবং স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমের উপস্থিতিতে জুনিয়র ডাক্তারদের (১৭ জন) সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের প্রিন্সিপাল এবং মেডিক্যাল সুপারিটেন্ডেন্ট কাম ভাইস-প্রিন্সিপালরাও (এমএসভিপি) বৈঠকেও ছিলেন। আর সেই বৈঠকে প্রাথমিকভাবে ৩০-৩৫ মিনিট আলোচনা হয়। তারপর চায়ের প্রস্তাব দেন মমতা।
মুখ্যমন্ত্রী ও জুনিয়র ডাক্তারদের চায়ের কথোপকথন
মুখ্যমন্ত্রী: তোমরা কি চা খাবে? চায়েও না?
জুনিয়র ডাক্তাররা: না ম্যাডাম। আমাদের ১৭ জন অনশনে আছে..আমরণ অনশন..১৭ দিন ধরে।
মুখ্যমন্ত্রী: তাতে কী? তোমরা তো খাওয়া-দাওয়া করছো (যাঁরা নবান্নে যান, তাঁরা সেইসময় আমরণ অনশন করছিলেন না)। যারা অনশনে আছে, তাদের তো চা খেতে বলছি না। যারা নেই, তাদের বলছি।
মুখ্যমন্ত্রী (নবান্নের কর্মীদের দিকে তাকিয়ে): যারা যারা চা খাবে, তাদের দিতে বলো।
আগেও চায়ের প্রস্তাব ফিরিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তাররা
তারপর আর কথা বাড়াননি মুখ্যমন্ত্রী। তিনি আলোচনা চালিয়ে যেতে থাকেন। তবে এই প্রথম মুখ্যমন্ত্রীর চায়ের প্রস্তাব ফেরালেন না জুনিয়র ডাক্তাররা। কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে প্রথমবার যখন বৈঠক ভেস্তে গিয়েছিল, তখনও মমতা জুনিয়র ডাক্তারদের চা খেয়ে যেতে বলেছিলেন। তাতে রাজি হননি জুনিয়র ডাক্তাররা।
সেই বৈঠকের পরে অনশন তুলে নেন জুনিয়র ডাক্তাররা। যদিও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে যে বৈঠক হয়েছে, সেটার কারণে আমরণ অনশন তোলা হয়নি বলে জানান তাঁরা। সোমবার রাতে জুনিয়র ডাক্তাররা জানান, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং মেডিক্যাল কলেজের নির্যাতিতা তরুণীর বাবা ও মায়ের কথায় তাঁরা আমরণ অনশন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। একইসঙ্গে সাধারণ মানুষও তাঁদের একই পরামর্শ দিচ্ছিলেন বলে জানান জুনিয়র ডাক্তাররা।