জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন মানেই সেটা যেন এলিট, শিক্ষিত শ্রেণির আন্দোলন। শহরকেন্দ্রিক আন্দোলন। সেখানে গ্রামে গঞ্জের মানুষের বিশেষ জায়গা নেই। এমন সমালোচনা কম কিছু হয়নি। অনেকেই বলেন চিকিৎসকরা অনেকেই গ্রাম থেকে উঠে এলেও তাঁদের আন্দোলন কেবলমাত্র শহরকেন্দ্রিক। বাংলার গ্রামে তার বিশেষ কোনও প্রভাব পড়ে না। গ্রামের মানুষ টিভিতে দেখেন, কাগজে পড়েন। কিন্তু এই আন্দোলনের সঙ্গে আপামর গ্রামবাসীর কোনও যোগাযোগ গড়ে ওঠেনি। বরং গ্রামীণ হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা না পেলে চিকিৎসকদের উপর রাগই করেন গ্রামের অনেকে।
তবে এবার চিকিৎসকদের গণকনভেনশনে শহরকেন্দ্রিক আন্দোলনের অভিমুখ কিছুটা বদলে গ্রামের দিকে করার ব্যাপারে কথাবার্তা হল। আরজি করের গোল্ডেন জুবিলি ভবনে সেই সংক্রান্ত আলোচনা হল। সেখানে উঠে এল শহরকেন্দ্রীক আন্দোলন থেকে কিছুটা মুখ ঘুরিয়ে গ্রামের দিকে নিয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গ।
বক্তব্য রাখতে গিয়ে জুনিয়র চিকিৎসক দেবাশিস হালদার আন্দোলনের নানা গতি প্রকৃতির কথা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, প্রথম যখন ৯ তারিখের ঘটনা শুনেছি তখন বিশ্বাস করতে পারিনি এমন কিছু ঘটতে পারে। অনেকেই জিজ্ঞাসা করেন কোথা থেকে আমরা এত জোর পাচ্ছি। এই ঘটনা আমাদের মানসিক জোর দিচ্ছে। ৯ তারিখের ঘটনার কূল কিনারা হয়নি। ১৪ তারিখের ভাঙচুরের ঘটনারও তদন্ত হয়নি। এই লড়াই থেকে অনেক কিছু পেয়েছি। আজ যখন আমাদের এখানে গণকনভেনশন হচ্ছে তখন নাকি একটা নতুন একটা সংগঠন তৈরি হয়েছে।
আমরা জেনেছি থ্রেট কালচারের সঙ্গে যুক্ত ছিল তারা। যারা নটোরিয়াস ক্রিমিনাল, শাসক দলের ছত্রছায়ায় থেকে সংগঠন চালায় তারা এখন প্রেস বাইট দিচ্ছে। এতদিন তারা কেন সামনে আসেনি? আন্দোলন শেষ হচ্ছে না। তিলোত্তমার ন্যায় বিচার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। এটা শুধু জেলায় নয়, মফঃস্বলেও নয়, গ্রামগঞ্জে পৌঁছে দেব। বললেন চিকিৎসক দেবাশিস হালদার।
কিন্তু প্রশ্ন উঠছে গ্রামে কি আদৌ সাড়া মিলবে? তার একটা প্রধান কারণ হল গ্রামাঞ্চলগুলিতে শাসকদলের দাপট। কলকাতার বুকে সরাসরি এসে আন্দোলন মঞ্চে ভাঙচুর চালাতে ভরসা পায় না শাসকদল। কিন্তু গ্রামাঞ্চলে আজও পুরোদমে দাদাগিরিতে অভ্যস্ত শাসকদলের একাংশ। সেক্ষেত্রে গ্রামের মানুষও নানা বাধ্যবাধকতার জন্য প্রকাশ্যে শাসক বিরোধী কথা বলতে ভরসা পান না। সেক্ষেত্রে আচমকা গ্রামে গিয়ে কতটা সাড়া ফেলতে পারবেন জুনিয়র চিকিৎসকরা তা নিয়ে প্রশ্নটা থেকেই গিয়েছে।