বাংলায় এবার প্রথম কোনও হাসপাতালের ছাদে রোজ এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স নামবে। শুনে এটা গল্প মনে হতে পারে। কিন্তু এটা কোনও গল্প নয়। বরং বাস্তবেই এটা ঘটতে চলেছে। চিকিৎসা পরিষেবার উন্নতির ক্ষেত্রে এমন পদক্ষেপ বলে জানা যাচ্ছে। আর সেটা করার জন্য প্রাথমিক অনুমতি ইতিমধ্যেই দিয়েছে ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ সিভিল অ্যাভিয়েশন (ডিজিসিএ)। তবে এটা সরকারি হাসপাতালের ক্ষেত্রে হচ্ছে না। এটা হচ্ছে বেসরকারি হাসপাতালে থাকছে। এই পরিষেবা দেখে পরবর্তী ক্ষেত্রে সরকারি হাসপাতালগুলির ক্ষেত্রে তা করতে পারে রাজ্য সরকার।
আগামীকাল, শুক্রবার পরীক্ষামূলকভাবে রুবির একটি হাসপাতালের ছাদে নামবে ওই হেলিকপ্টার। তাই সেই ছাদে তৈরি করা হয়েছে হেলিপ্যাড। শুক্রবার ওই ছাদে উপস্থিত থাকবেন ডিজিসিএ’র প্রতিনিধিদল। ডিজিসিএ’র অনুমতি ছাড়া কোনও অসামরিক বিমান বা হেলিকপ্টার উড়তে পারে না। এটাই নিয়ম। তাই ডিজিসিএ সূত্রের খবর, কলকাতা শহর খুব ব্যস্ত। একটি বাড়ির ছাদে রোজ হেলিকপ্টার ওঠা–নামা করলে কী ধরনের সমস্যা হতে পারে সেটা খতিয়ে দেখা হয়েছে। এক্ষেত্রে কয়েকটি শর্ত মানতে হয়। এক, হেলিকপ্টারকে দুই–ইঞ্জিনের হতে হবে। দুই, হেলিকপ্টারে দু’জন পাইলট থাকবে। তিন, ঘিঞ্জি এলাকায় অন্যান্য নির্মাণ বাঁচিয়ে ওঠা–নামা করতে হবে। তাত জন্য চাই প্রশিক্ষণ।
আরও পড়ুন: ‘আমাদের দেশ ১৯৪৭ সালের ১৫ অগস্ট স্বাধীন হয়’, ভাগবতকে সংবিধান পাঠ মমতার
এখানেই শেষ নয়, চার, কোনও এলিভেটেড হেলিপ্যাডে হেলিকপ্টার ওঠা–নামা করলে সেখানে ভালরকম অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা থাকতে হয়। ওই বেসরকারি হাসপাতালের দাবি, তাদের ফায়ার ফাইটিং টিম হায়দরাবাদ থেকে প্রশিক্ষণ করে এসেছে। পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে। এবারের গঙ্গাসাগর মেলা থেকে অসুস্থদের তুলে আনতে রাজ্য সরকার একটি এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া নেয়। আজ, ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত গঙ্গাসাগরে পরিষেবা দেওয়ার পর ১৭ জানুয়ারি সেটি বেহালা থেকে উড়ে বেসরকারি হাসপাতালের ছাদে গিয়ে নামবে। এই হেলিকপ্টার ভুবনেশ্বর থেকে এসেছে।
ওই বেসরকারি হাসপাতাল সূত্রে খবর, ছাদে হেলিপ্যাড গড়ে তোলার এই ভাবনাকে বাস্তবে রূপায়িত করতে চার বছর ধরে কাজ করতে হয়েছে। ত্রিপুরা–সহ বাংলাদেশ এবং নানা দেশ বা রাজ্য থেকে নিয়মিত রোগীরা যাতায়াত করেন। সেক্ষেত্রে কোনও ইমার্জেন্সি পরিস্থিতি তৈরি হলে কাজ করবে এই এয়ার অ্যাম্বুলেন্স। অত্যন্ত কম সময়ে হাসপাতালে পৌঁছতে ব্যবহার হবে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স। সরাসরি হাসপাতালে এসে নামতে পারলে দ্রুত চিকিৎসাও মিলবে। সময় বাঁচানো এবং রোগীকে বাঁচাতেই এমন পদক্ষেপ করা হচ্ছে। যা আগামী দিনে আরও অনেকে তা করবে।