বেসরকারি হাতে রেল স্টেশনের কো–ব্র্যান্ডিংয়ের পর এবার ট্রেনে হকারির স্বত্বও বেসরকারি সংস্থার হাতে ‘বিক্রি’ করে দিল কেন্দ্রীয় সরকার। এমনই অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। কারণ, এখন থেকে ট্রেনে বা স্টেশনে হকারি করতে গেলেও বেসরকারি সংস্থাকে হকারদের টাকা দিতে হবে। হকারি করার অনুমতি বাবদ প্রত্যেক মাসে হাজার টাকা দিয়ে রেজিস্ট্রেশন পুনর্নবীকরণ করাতে হবে। এমনকী পাঁচদিন দেরি হলে গুনতে হবে ৫০০ টাকা জরিমানাও।
আর কী শর্ত থাকছে? জানা গিয়েছে, এখন থেকে হকারদেও কাটতে হবে ট্রেনের টিকিট। যা খুশি সামগ্রী বিক্রি করতে পারবেন না হকাররা। শুধুমাত্র প্যাকেটজাত দ্রব্যই বিক্রি করা যাবে। যাতে সর্বোচ্চ মূল্য এবং মেয়াদ ফুরানোর তারিখ লেখা থাকবে। সুতরাং ঠোঙায় ঝালমুড়ি থেকে পাঁপড়, ঘুগনি বিক্রি বন্ধ হতে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
এই খবর চাউর হতেই রাজ্যের পূর্তমন্ত্রী মলয় ঘটক বলেন, ‘আমরাও চাই, হকারদের পরিচয়পত্র দিয়ে তাঁদের বৈধভাবে ব্যবসা করার সুযোগ দেওয়া হোক। কিন্তু তা বলে বেসরকারি সংস্থার হাতে সব তুলে দিতে হবে? সরকারি জায়গায় ব্যবসা করতে কেন বেসরকারি সংস্থাকে টাকা দিতে হবে? কেন তাঁরা নিজেদের ইচ্ছামতো ব্যবসা করতে পারবেন না? আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
কেন এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে? পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক একলব্য চক্রবর্তী বলেন, ‘পুরো বিষয়টি পরিকল্পনা স্তরেই রয়েছে। পরবর্তী কোনও সিদ্ধান্ত হয়েছে কি না খোঁজ নিয়ে দেখব।’ পূর্ব রেলে হকারির স্বত্ব নিজেদের হাতে নিতে টেন্ডার বাবদ কয়েক কোটি টাকা ইতিমধ্যেই রেলকে তুলে দিয়েছে একটি বেসরকারি সংস্থা।
সূত্রের খবর, হকারদের নিজের খরচে ডাক্তারি পরীক্ষা এবং পুলিস ভেরিফিকেশন করিয়ে নাম নথিভুক্ত করতে হবে। তাঁদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। তারপর আই কার্ড ও পোশাক দেওয়া হবে। সেই পোশাক পরেই হকারি করতে হবে। আই কার্ডের কিউআর কোড স্ক্যান করে হকারের পরিচয় যাচাই করতে পারবেন যাত্রীরাও। ৫৯০ টাকা দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করার পরও প্রতি মাসে রেজিস্টেশন রিনিউ করতে এক হাজার টাকা দিতে হবে।