রাজ্যে ২০১০ সালের পর থেকে জারি সমস্ত OBC শংসাপত্র বাতিলের যে নির্দেশ বুধবার কলকাতা হাইকোর্ট দিয়েছে তা মানেন না বলে প্রকাশ্য মঞ্চ থেকে ঘোষণা করলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন খড়ায় দমদম কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী সৌগত রায়ের সমর্থনে এক জনসভা থেকে আদালতের বিরুদ্ধে মুসলিমদের বঞ্চিত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগ করেন তিনি। ঘোষণা করেন, আদালতের নির্দেশের পরেও জারি থাকবে ওবিসি সংরক্ষণ।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর উদ্বেগ প্রকাশের ২৪ ঘণ্টা পরেও রামকৃষ্ণ মিশনে হামলা নিয়ে কিছু জানেনই না মমতা
পড়তে থাকুন: রাবণের রাজত্বে সাধুদের ওপর তো হামলা হবেই: সুকান্ত মজুমদার
এদিন মমতা দৃশ্যত ছিলেন ক্ষুব্ধ। আদালতের রায় মানি না বলে ঘোষণা করার পাশাপাশি বিচারপতিদেরও আক্রমণ করেন তিনি। বলেন, ‘আজকেও শুনেছি একজন জাজকে দিয়ে, যিনি ভদ্রলোক জাজ বলে যাঁকে আমি সম্মান করি। অনেক ব্যাপারে বিখ্যাত। কাজ নেই কর্ম নেই... কয়েকদিন ধরে প্রধানমন্ত্রী বলে বেড়াচ্ছেন না সংখ্যালঘুরা তফশিলিদের সংরক্ষণ কেড়ে নেবে। তাহলে সংবিধান ভেঙে দিতে হয়। সংখ্যালঘুরা কখনও তফশিলি বা আদিবাসীদের সংরক্ষণে হাত দেবে না।’
বিজেপিকে আক্রমণ করে মমতা বলেন, ‘বদমাইশ লোকেরা কাজ করায় এজেন্সিকে দিয়ে। কাকে দিয়ে একটা অর্ডার করিয়েছে। যদিও তার রায় আমি মানি না। কারণ ২৬ হাজার শিক্ষককে যখন বাতিল করেছিল বিজেপি আমি বলেছিলাম ওদের রায় আমরা মানি না। তেমনি বলছি আজকে, যে রায় দিয়েছে আজকে, যেই দিয়ে থাকুন, নাম বলব না। জাজমেন্ট নিয়ে বলা যায়। বিজেপির রায় আমরা এটা মানব না। ওবিসি সংরক্ষণ চলছে, চলবে।’
আরও পড়ুন: যখন তখন হামলা হতে পারে, আশ্রম ও স্কুলে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা চাইলেন কার্তিক মহারাজ
আদালতকে আক্রমণ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সাহস কত বড়। কোর্টে কখনও ভাগাভাগি হয় না। দেশে কখনও ভাগাভাগি হয় না। কেউ বলতে পারে আমি হিন্দুকে বাদ দিয়ে দিলাম? মুসলমানকে রাখলাম? বা মুসলিমকে বাদ দিলাম, হিন্দুকে রাখলাম? আরে, এরা জানে? হিন্দু বলতে ওখানে কারা আছে। আমি করিনি এটা। উপেন বিশ্বাস তখন চেয়ারম্যান ছিলেন। বাড়ি বাড়ি সার্ভে করে করে আমরা OBC সংরক্ষণ করেছিলাম। ১২ সাল থেকে চলছে। কোর্টে আগেও কেস হয়েছিল। কেস খালি হয়ে গেছিল। স্পর্ধা তো কম নয়! একটা সরকার কী পলিসি নেবে তা নিয়ে…. যাও না, বিজেপির একটা পলিসি নিয়ে কথা বলার হিম্মত আছে না সাহস আছে। কিছু দালাল, হঠাৎ করে ২৬ হাজার চাকরি খেয়ে নেও। OBCদের সংরক্ষণ বন্ধ করে দেও। হবে না। তাও ভাগ করে দিয়েছে, মুসলিমদেরটা একেবারে বাদ। কেন? মুসলিমরা আমার দেশের নাগরিক নয়? এটা মন্ত্রিসভায় পাশ হয়েছে। বিধানসভায় পাশ হয়েছে। কোর্টের রায়ও আছে। যারা ভোটের আগে এই সব নিয়ে খেলা করছেন, সন্দেশখালি নিয়ে করলেন চক্রান্ত ওয়ান ফাঁস হয়ে গেল। দাঙ্গা নিয়ে করলেন চক্রান্ত দুই।’