মুর্শিদাবাদে হিংসার ঘটনায় এনআইএ তদন্ত চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে দু'টি মামলা করা হল। এর মধ্যে একটি হল জনস্বার্থ মামলা। এবং অন্যটি উপদ্রুত এলাকার আক্রান্ত বাসিন্দাদের করা মামলা। প্রথম মামলাটি রুজু করা হয় কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে এবং দ্বিতীয়টি দায়ের হয় বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে। খুব সম্ভবত, আগামিকালই (বৃহস্পতিবার - ১৭ এপ্রিল, ২০২৫) এই দু'টি মামলার শুনানি হতে পারে।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদের হিংসার ঘটনায় জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা বা এনআইএ-কে দিয়ে তদন্ত করানোর দাবি তুলে মামলা রুজু করার জন্য কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন বিজেপি নেত্রী তথা আইনজীবী প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়াল এবং আইনজীবী সংযুক্তা সামন্ত। প্রধান বিচারপতি তাঁদের এই জনস্বার্থ মামলাটি রুজু করার অনুমতি দেন।
অন্যদিকে, মুর্শিদাবাদ জেলার যেসমস্ত জায়গায় হিংসা ছড়িয়েছিল - যেমন - সুতি, সামশেরগঞ্জ, ধুলিয়ান প্রভৃতি এলাকার বাসিন্দারা একত্রিতভাবে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে আলাদা করে একটি মামলা রুজু করেন। তাঁদেরও বক্তব্য, এই মামলার তদন্ত এনআইএ-কে দিয়েই করাতে হবে।
এদিকে, আজ (বুধবার - ১৬ এপ্রিল, ২০২৫) কলকাতায় বিধানসভার বাইরে 'হিন্দু শহিদ দিবস' পালন করার সময় রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীও বারবার মুর্শিদাবাদের ঘটনায় এনআইএ তদন্তের দাবি তুলেছেন।
অন্যদিকে, ইতিমধ্যেই মুর্শিদাবাদ হিংসার তদন্তের জন্য আদালতের নজরদারিতে সিট (বিশেষ তদন্তকারী দল)-কে দিয়ে তদন্ত করানোর দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে মামলা রুজু করেছেন শশাঙ্ক শেখর ঝা নামে এক আইনজীবী।
এদিকে, রাজ্য পুলিশ, বিএসএফ ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর যৌথ প্রচেষ্টায় ইতিমধ্যেই মুর্শিদাবাদের উপদ্রুত এলাকায় শান্তির বাতাবরণ ফিরতে শুরু করেছে। গতকাল - পয়লা বৈশাখে ধুলিয়ানে দোকান, বাজার একটু একটু করে খুলতে থাকে। সেখানে কেনাকাটা করতেও আসেন মানুষজন। যদিও তাঁদের সংখ্যা খুব বেশি ছিল না।
এদিকে, যাঁরা আতঙ্কে ঘর ছেড়ে পাশের জেলা মালদায় আশ্রয় নিয়েছিলেন, তাঁদের একটা বড় অংশই এখনও ঘরে ফেরেননি। তাঁদের যাতে ফেরানো যায়, আপ্রাণ সেই চেষ্টা করে যাচ্ছে পুলিশ, বিএসএফ ও আধাসেনা।
এই প্রেক্ষাপটে কলকাতা হাইকোর্ট মুর্শিদাবাদের ঘটনায় এনআইএ তদন্তের নির্দেশ দেয় কিনা, এখন সেটাই দেখার। উল্লেখ্য, এর আগে আদালতই জেলায় অশান্তি বাগে আনতে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছিল।