জন্মের পর থেকেই পিঠে টিউমার সন্তানের। এক বছর ধরে বর্ধমানে গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসাও চলে। কিন্তু লাভ হয়নি। বয়সের সঙ্গে টিউমারও বাড়তে থাকে। বাড়তে থাকে একরত্তি শিশুর যন্ত্রণা। অসুস্থ ওই শিশুকে বর্ধমানের সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানকার চিকিৎসকরা বাবা সমীর সর্দারকে কলকাতায় ডাক্তার দেখানোর পরামর্শ দেন। অসুস্থ সন্তানের কষ্ট নিরাময়ের আশা নিয়ে রাতারাতি শহর কলকাতায় চলে আসেন তার বাবা–মা। আর সোমবার কলকাতার অন্যতম বড় সরকারি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের বাইরেই মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ল একরত্তি শিশু।
কিন্তু কীভাবে? ওই পরিবারের অভিযোগ, বর্ধমানের সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল থেকে তাঁদের রেফার করা হয় এনআরএস হাসপাতালে। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় সেখানকার চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী তড়িঘড়ি সন্তানকে নিয়ে তাঁরা এনআরএস হাসপাতালে আসেন। এখানে চিকিৎসকেরা শিশুটিকে দেখে কয়েকটি পরীক্ষা করতে বলেন। সমস্ত পরীক্ষা করানো হয়। কিন্তু এনআরএসে শিশুটিকে ভর্তি নেওয়া হয় না। রেফার করে দেওয়া হয় এসএসকেএম হাসপাতালে।
এর পর রাজ্যের অন্যতম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল এসএসকেএমে অসুস্থ সন্তানকে নিয়ে হাজির হন ওই দম্পতি। সেখানেও চিকিৎসকেরা শিশুটিকে দেখেন কিন্তু পরিষ্কার জানিয়ে দেন যে কোনও বেড নেই। অভিযোগ, শিশুর অবস্থা গুরুতর হওয়া সত্ত্বেও তাদের ফের অন্য কোথাও যাওয়ার কথা বলে কর্তৃপক্ষ। বেড পাওয়ার আশায় হাসপাতাল চত্বরেই অসুস্থ সন্তানকে নিয়ে সাতদিন কাটিয়ে দেন ওই দম্পতি। সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ হঠাৎ অসাড় হয়ে পড়ে শিশুর দেহ। চিকিৎসকরাই জানান, শিশুটি মারা গিয়েছে।
কলকাতার এনআরএস এবং এসএসকেএম— শিশুমৃত্যুর ঘটনায় এই দুটি হাসপাতালের বিরুদ্ধেই গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন সন্তান–হারানো ওই দম্পতি। অভিযুক্ত বেপরোয়া চিকিৎসকদের শাস্তির দাবিও জানিয়েছেন তাঁরা। ওই দুই সরকারি হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।