অনুরোধ করেছিলেন সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের। সেই আর্জি গৃহীত হয়নি। চিঠির জবাব দেওয়ার মতো ‘সৌজন্যও’ কেন্দ্রীয় সরকার দেখায়নি। বরং ডিওপিটি মন্ত্রক থেকে আলাপনবাবুকে ফের মঙ্গলবার দিল্লির নর্থ ব্লকে হাজির হওয়ার সমন জারি করা হয়েছে। তাই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ‘স্বৈরাচারী’ অ্যাখ্যা দিয়ে অগণতান্ত্রিক এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে দেশের সব বিরোধীকে একযোগে যুদ্ধের ময়দানে নেমে পড়ার ডাক দিলেন ‘ফায়ার ব্র্যান্ড লেডি’ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই ইস্যুতে কংগ্রেস, এনসিপি, শিবসেনা, আম আদমি পার্টি, ডিএমকে, ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা–সহ সব বিরোধী পক্ষকে একত্র করার কাজ শুরু করে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তারপরই আজ সরব হয়েছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের বিরোধী নেতারা। এক সুরে তাঁদের অভিযোগ, দেশের সংবিধান এবং যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর উপর আঘাত হানছে মোদী সরকার। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েনের কথায়, ‘এটা শুধুমাত্র বাংলার বিষয় নয়। এটি এখন দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাকে সুরক্ষিত রাখার প্রশ্ন হয়ে উঠেছে। সব ঠিক থাকলে আগস্ট মাসে বসবে সংসদের বর্ষাকালীন অধিবেশন। সেখানে সব বিরোধী দলই এই নিয়ে আওয়াজ তুলবে।’
আইএএস মহলের বক্তব্য, আলাপন ইস্যুতে পরপর বিধি লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে। ইন্ডিয়ান অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস (ক্যাডার) রুলের যে ৬(১) বিধি অনুসারে দিল্লিতে তলব করা হয়েছিল, তাতে রাজ্যের সম্মতি নেওয়া প্রয়োজনীয় হলেও, তার তোয়াক্কা করা হয়নি। ট্রানজাকশন অব বিজনেস রুলসের ৬(১) বিধির প্রথম অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, কোনও আইএএস অফিসারকে ডিওপিটি মন্ত্রকে এসে রিপোর্ট করার নির্দেশ জারি করার ক্ষমতা ‘নিয়োগ সংক্রান্ত ক্যাবিনেট কমিটি’র নেই। তা করতে হলে সংশ্লিষ্ট ঠিক কোন পদে এসে যোগ দেবেন, তা স্পষ্ট করে বলতে হবে। আলাপনবাবুকে যে সমন জারি করে ফের ডিওপিটিতে যোগ দিতে বলা হয়েছে, সেখানেও তাঁর ‘নতুন’ পদের উল্লেখ নেই।
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল এই ঘটনাকে প্রসঙ্গে টুইটারে লেখেন, ‘এখন রাজ্য সরকারের সঙ্গে লড়াই করার সময় নয়। বরং একযোগে করোনাভাইরাস মোকাবিলার করার কথা।’ শিবসেনার রাজ্যসভার সদস্য প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী টুইটে লেখেন, ‘বাংলার বাঘিনী–১, দিল্লির কাগুজে বাঘ–০!’ সমাজবাদী পার্টির কিরণ্ময় নন্দ জানান, ‘এটা প্রতিহিংসাপরায়ণ রাজনীতি ছাড়া কিছুই নয়। আমরা এই বিষয়টি নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে আছি।’ কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই বিবৃতি জারি করা হয়েছে। সবমিলিয়ে মোদী বিরোধী সুর জোরদার হচ্ছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।