একে তো প্রচন্ড গরম। তার উপর ট্রেনের কামরায় একেবারে গাদাগাদি ভিড়। তিল ধারনের জায়গা নেই। সবথেকে সমস্যায় পড়েছেন বয়স্ক ও শিশুরা। কীভাবে ভিড়ে ঠাসা কামরায় ওঠা সম্ভব সেটা কিছুতেই বুঝতে পারছেন না তাঁরা। পূর্ব রেলের উত্তর ও দক্ষিণ শাখার একাধিক ট্রেনে এটা যেন রোজকার ছবি। বর্তমানে শিয়ালদায় প্লাটফর্ম সম্প্রসারণের জন্য যাত্রীদের ভোগান্তি বেড়েছে। কিন্তু কেবলমাত্র সাময়িক এই ভিড়ে হচ্ছে সেটা অবশ্য নয়। বাস্তবে এই ভিড় যেন রোজকার ঘটনা। কোনও যাত্রী যদি ভাবেন শিয়ালদায় উঠে দমদমে নামবেন তবে সেটা কার্যত অসম্ভব। কারণ দমদমে যত সংখ্যক যাত্রী ওই কামরায় ওঠার চেষ্টা করেন তাদের ভিড়ে দমদমে নামা কার্যত অসম্ভব। আর এই প্রচন্ড ভিড়ের জেরে দুর্ঘটনার নজিরও রয়েছে। অফিসযাত্রীরা হাড়ে হাড়ে জানেন বিষয়টি।
ট্রেন যাত্রীদের দাবি, দিনের পর দিন এইভাবে প্রান হাতে করে চলাফেরা করতে হচ্ছে। কিন্তু তারপরেও রেলের হুঁশ ফিরছে না। বার বার এনিয়ে বলা হয়েছে। যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য কার্যত শিকেয়। প্রচন্ড গরমে কামরায় অসুস্থ হয়ে পড়ছেন যাত্রীরা। কামরার ভেতরে প্রবেশ করার মতো পরিস্থিতিও নেই। দরজার বাইরে ঝুলছেন যাত্রীরা। সেই অবস্থায় ট্রেন ছেড়ে দিচ্ছে। এদিকে কর্মস্থলে সঠিক সময়ে যাওয়ার তাগিদে যাত্রীরা সেই ভিড় ট্রেনে চাপতে বাধ্য় হচ্ছেন।
সব মিলিয়ে একেবারে অস্থির পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। পরিসংখ্য়ান বলছে গত এক বছরে শিয়ালদা-নামখানা শাখায় ভিড় ট্রেনে ঝুলন্ত অবস্থায় পড়ে গিয়েছে ৫-৬জন মারা গিয়েছেন। অন্তত ১০জন জখম হয়েছেন। কিন্তু তারপরেও পরিস্থিতির কোনও বদল নেই। দিনের পর দিন এই ভিড় ট্রেনে যাতায়াত। মূলত কলকাতাগামী মানুষের ভিড়ে ঠাসা থাকে ট্রেন থাকে। সেই ভোর থেকে শুরু হয় ভিড়। এরপর সকাল সাড়ে ৮টা-৯টা পর্যন্ত এই ভিড়টা থাকে। বিভিন্ন অফিসের কর্মীরা, ছাত্রছাত্রী, ব্যবসায়ীরা দলে দলে ট্রেনে চেপে কলকাতায় আসার চেষ্টা করেন। বাসের যোগাযোগ সেভাবে না থাকার জন্য ট্রেনই একমাত্র ভরসা। সেক্ষেত্রে বছরের পর বছর ধরে একই পরিস্থিতি। কিন্তু নিস্তার পাওয়ারও কোনও পথ নেই।
মূলত পেটের টানেই কলকাতা আসেন তাঁরা। একটা ভিড় ট্রেন ছাড়লে পরের ট্রেনের জন্য আবার ১ ঘণ্টার অপেক্ষা। সেকারণে ট্রেন মিস করতে চান না তাঁরা। আর তার জেরেই এই ভিড়ে কষ্ট হলেও করার কিছু থাকে না।