মে মাসে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে নবান্নে এসে বৈঠক করে গিয়েছেন নয়াদিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তখন জাতীয় রাজনীতির অলিন্দে বিরোধী জোট নিয়ে আলোচনা হয়। লোকসভা নির্বাচনে জোট করে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কথাও হয়। জোট বলতে বিরোধী দলগুলির মিলিত জোট। পঞ্চায়েত নির্বাচনে বাংলায় আম আদমি পার্টি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা ছিল। সেখানে শুক্রবার কেজরিওয়ালের দল জানিয়ে দিল, পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচনে তারা প্রার্থী দেবে না এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে না।
বছর ঘুরলেই ২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচন। সেখানে সমস্ত বিরোধী দলগুলি এক হয়ে বিজেপিকে কোণঠাসা করে দিতে চায়। তাই বৃহত্তর লড়াইয়ের দিকে তাকিয়ে বাংলায় তৃণমূল কংগ্রেসের পথে বাধা হতে চায় না কেজরিওয়ালের দল। সেই বার্তা দিতেই এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে আসল তাঁরা। এই বিষয়ে বাংলার দায়িত্বপ্রাপ্ত আপের কেন্দ্রীয় নেতা সঞ্জয় বসু সংবাদমাধ্যমে আজ শুক্রবার বলেন, ‘আমাদের মূল লড়াই বিজেপির বিরুদ্ধে। তাই আমরা যে রাজ্যে যে দল শক্তিশালী তাঁদেরকে জায়গা ছেড়ে দিই। আর তাই পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত নির্বাচনে আমরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব না। এই সিদ্ধান্ত শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে নেওয়া হয়েছে।’
এদিকে বিজেপি বিরোধী জোট গঠনে লোকসভা নির্বাচনের ক্ষেত্রে একটি ফর্মূলা বাতলে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যে রাজ্যে যে আঞ্চলিক দল শক্তিশালী তাকে জায়গা ছেড়ে দিতে হবে। আর তাতেই হারবে বিজেপি। যেমন বাংলায় তৃণমূল কংগ্রেস শক্তিশালী, তাই বাংলায় তারাই লড়বে। যদিও এটার বিরোধিতা করেছিলেন কংগ্রেস সাংসদ অধীররঞ্জন চৌধুরী। এবার এআইসিসি ৬টি রাজ্যে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পরিবর্তন করতে চলেছে। জাতীয় রাজনীতিতে বিজেপি বিরোধী প্ল্যাটফর্মে মমতাকেই পাশে চাইছেন সোনিয়া গান্ধী। তাই অধীর চৌধুরী তুমুল মমতা বিরোধী হওয়ায় তাঁকেও সরিয়ে দেওয়া হতে পারে বলে সূত্রের খবর।
আর কী জানা যাচ্ছে? বাংলায় পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে বলে আপ প্রথমে সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু সম্প্রতি কেজরিওয়ালের সঙ্গে মমতার বৈঠক হয়েছে। এবার তারা সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে মমতার ফর্মুলাকেই সিলমোহর দিল। অন্যদিকে আগামী ২৩ জুন পাটনায় বিজেপি বিরোধী জোটের বৈঠক রয়েছে। এই সিদ্ধান্ত বদল নিয়ে আপ নেতা সঞ্জয় বলেন, ‘বাংলায় আমরা লড়াই করলে বিজেপির সুবিধা হবে। সেটা আমরা চাই না। আপের পক্ষে প্রার্থী মনোনয়ন প্রক্রিয়া শেষ করেও মুম্বইয়ের পুরভোটে লড়বে না দল। বাংলার পঞ্চায়েত নির্বাচনেও আপ অংশগ্রহণ করবে না।’