উল্টোডাঙা থেকে সল্টলেকে প্রবেশের দু'নম্বর গেটের কাছে মঙ্গলবার দুটি বাসের রেষারেষির জেরে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে তৃতীয় শ্রেণির এক খুদে পড়ুয়ার। বাগুইআটির একটি বেসরকারি স্কুলে ছুটির পর দুই ছাত্রকে স্কুটিতে চাপিয়ে কলকাতার বাড়ির পথে ফিরছিলেন অভিভাবক। সেই সময় ২১৫ এ রুটের একটি বাস স্কুটিতে ধাক্কা মারে। তার জেরে মৃত্যু হয় পড়ুয়ার। এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা থেকে শুরু করে হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন মৃত পড়ুয়ার অভিভাবকরা। তাঁদের অভিযোগ, সাহায্যের জন্য পুলিশ এগিয়ে আসেনি। হাসপাতালেও চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়া যায়নি। তারফলেই মৃত্যুর কোলে ঢেলে পড়ে তাদের ছেলে। তাঁদের কথায়, প্রশাসন তৎপর হলে তাঁদের ছেলেকে বাঁচানো যেত।
আরও পড়ুন: 'পুলিশ শুধু টাকা চেনে’, বাসের রেষারেষিতে ছাত্রের মৃত্যুতে ফুঁসছে সল্টলেক, আহত মা
মৃত পড়ুয়া আয়ুশের মা জানান, তাঁর ছেলে বাগুইআটির একটি বেসরকারি স্কুলের মর্নিং সেকশনে পড়ত। সে বাড়ির ছোট ছেলে। বড় ছেলেও ওই স্কুলে পড়ে ডে সেকশনে। তিনি জানান, স্কুটারে করে আয়ুশ এবং ভাইঝিকে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। রাস্তার এক ধার দিয়েই যাচ্ছিলেন। উল্টোডাঙার হাডকো মোড় সংলগ্ন সল্টলেকের দু’নম্বর গেটের কাছে আসতেই একটি বাস বেপরোয়া গতিতে পিছন দিক থেকে ধাক্কা মারে। ঘটনায় তিনজনই বাইক থেকে ছিটকে পড়ে যান। তাঁর ভাইঝির চোট সেরকম গুরুতর না হলেও আয়ুশ অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিল। মৃতের মায়ের অভিযোগ, কাছাকাছি পুলিশ ছিল। তা সত্ত্বেও সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেনি পুলিশ। শেষ পর্যন্ত স্থানীয় এক অটোচালক তাঁদের সাহায্যে এগিয়ে আসেন। তিনি তাদের নিয়ে গিয়ে উল্টোডাঙ্গার একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করেন। প্রথমে সেখানে আয়ুশের মাথায় ব্যান্ডেজ করে অক্সিজেন দেওয়া হয়। কিন্তু, সেই নার্সিংহোমে আইসিইউ না থাকায় ফুলবাগানের বিসি রায় শিশু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু, সেই হাসপাতালে চিকিৎসকরা তাকে ভর্তি নিতে চাননি বলে অভিযোগ।
চিকিৎসকরা জানান, হাসপাতালে এ ধরনের পরিকাঠামো নেই। এমনকী পুলিশও সেই হাসপাতালে শিশুকে ভর্তি করার জন্য উদ্যোগ নেয়নি বলে অভিযোগ। পুলিশের তরফে জানানো হয় সেটা তাদের এলাকাভুক্ত নয়। শেষ পর্যন্ত বেলেঘাটার একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয় আয়ুশকে। কিন্তু, ততক্ষণে মৃত্যু হয় তার।
মৃতের মায়ের আরও অভিযোগ, ওই রাস্তায় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। তা সত্ত্বে সেখানে কোনও স্পিড ব্রেকার নেই। ট্রাফিক পুলিশকেও খুব একটা দেখা যায় না। তবে সিভিক ভলেন্টিয়ারদের দেখা যায়। দুর্ঘটনাস্থলের কাছে একাধিক স্কুল থাকা সত্ত্বেও সেখানে ফুটপাতের কোনও ব্যবস্থা নেই। তাঁর কথায়, প্রশাসন একটু তৎপর হলে এভাবে ছেলেকে হারাতে হত না।