হবু বরকে একটু অপেক্ষা করতে বলেছিলেন রিমা সিং। ফোনে রিমা তাঁর হবু বর প্রবীর রায়কে বলেছিলেন বাড়িতে এসে অপেক্ষা করতে। কারণ শুক্রবারই ছিল তাঁদের পাকা দেখা। আর মাস খানের পরই বিয়ের পিঁড়িতে বসার কথা ছিল রিমার। কিন্তু পার্কসার্কাসে কনস্টেবলের গুলিতে প্রাণ হারান রিমা। হবু বরকে দেওয়া কথা রেখে সময় মতো বাড়ি যাওয়া হয়নি তাঁর। অন্ধকার নেমে এল তাঁর পরিবারের উপর।
হাওড়ার পশ্চিম দাশনগরের ফকির মিস্ত্রি বাগানে থাকতেন ২৮ বছর বয়সি রিমা সিং। বাবা অরুণ সিং কাজ হারিয়েছেন পাঁচ বছর। একা নিজের কাঁধে সংসার টানতেন রিমাই। নিজে গ্র্যাজুয়েশন করছিলেন রিমা। সঙ্গে উপার্জনের জন্য ফিজিওথেরাপি করতেন। সেই টাকা দিয়েই চলত সংসার। তাঁর ২২ বছর বয়সি ভাই উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে বসে। ভাইকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করতে চেয়েছিল রিমা। দিদা সাবিত্রী সামন্তের দেখভালও করতেন সেই রিমা। এই আবহে রিমার মৃত্যুতে ভেসে যাওয়ার জোগাড় তাঁর পরিবারও।
পার্ক সার্কাসে বাংলাদেশ উপদূতাবাসের সামনে এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করেছিলেন চেড়ুপ লেপচা। তখন দুপুর দুটো। সেই সময় সেখান দিয়ে যাচ্ছিলেন রিমা। তখনই এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। নিহতের মা ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, ‘বেলা ১২টা নাগাদ বাড়ি থেকে বেরোয় ও। জানতাম না পার্ক সার্কাসে গিয়েছে। বিকেল ৪.২০ মিনিট নাগাদ বাড়ির মালিক খবর দেয় রিমা মারা গিয়েছে। আমি মেনে নিতে পারছি না।’ তিনি জানিয়েছেন, চরম অনটনের সংসার তাঁদের। ধারদেনা করে চলে পরিবার। বেশ কয়েকমাসের বাড়িভাড়াও বাকি।