খাস কলকাতার ব্যাঙ্কের লকার থেকে কয়েক কোটি টাকার গয়না উধাও হয়ে যায়। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই ব্যাপক আলোড়ন পড়ে যায়। পার্ক স্ট্রিটের ব্যাঙ্কের লকার থেকে খোয়া যায় মহামূল্যবান হিরে, সোনার গয়না। এমন ঘটনার তদন্ত নেমে পুলিশ বুঝতে পারে সরষের মধ্যে ভূত না থাকলে এই কাণ্ড ঘটানো সম্ভব নয়। কারণ কোথাও সিঁধ কাটার চিহ্ন নেই। আবার বাইরে থেকেও কারও আসার প্রমাণ পুলিশ পায়নি। তাই ভিতরের কর্মীরাই জড়িত বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে আসে। অবশেষে পুলিশের তদন্তে সেই তথ্যই প্রমাণিত হয়েছে।
এদিকে গ্রাহকরা অনেক বিশ্বাস, ভরসা করে ব্যাঙ্কের লকারে নিজেদের সোনা–দানা রেখে ছিলেন। কিন্তু দেখা গেল, ওই ব্যাঙ্কের কর্মীরাই ধরা পড়লেন চুরির দায়ে। এই অভিযোগে এফআইআর দায়ের হয় পুলিশে। পার্ক স্ট্রিটের এক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে এই ঘটনা ঘটেছে বলে খবর। আর তার জেরে ওই ব্যাঙ্কের লকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত মহিলা কর্মী এবং তাঁর দাদাকে গ্রেফতার করেছে লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগ। তাঁদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে ১.২৫ কোটি মূল্যের সোনা এবং হিরের গয়না। সুতরাং চুরির মাল পাওয়া গিয়েছে। তার সঙ্গে বাজেয়াপ্ত প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা নগদ, ল্যাপটপ, মোবাইল এবং বিলাসবহুল গাড়ি। এই গোটা ঘটনার তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যেতে চান গোয়েন্দারা। কারণ নেপথ্যে মাথাটা কে? সেটা জানার জন্য।
আরও পড়ুন: দিল্লি বিমানবন্দরের ২ নম্বর টার্মিনাল ছয় মাস বন্ধ থাকবে, কেন এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হল?
অন্যদিকে একজন মহিলার পক্ষে যে এত বড় একটা অপারেশন একা করা যে সম্ভব নয় সেটা বুঝতে পারেন পুলিশ অফিসাররা। ব্যাঙ্কের লকারে যদি সোনা–হিরে নিরাপদে না থাকে তাহলে কোথায় থাকবে? এই প্রশ্নও উঠতে থাকে। এই ব্যাঙ্কের লকারের দায়িত্বে ছিলেন মৌমিতা শী নামে এক যুবতী। তিনি কসবা এলাকার বাসিন্দা। শশী পাসরি নামে একজন গ্রাহক নিজের গয়না আনতে গিয়ে ব্যাঙ্কে তা পাননি। তাই পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে লালবাজারের গোয়েন্দা দফতরের কাছে যায় তদন্তভার। মৌমিতার উপর নজরদারি চালিয়ে গোয়েন্দারা বুঝতে পারেন চুরির মাল আছে তাঁর কাছেই।
পুলিশ সূত্রে খবর, কসবার বাসিন্দা মৌমিতা শী এবং তাঁর দাদা মিঠুন শী দু’জনে মিলে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের লকারের হিরে–গয়না সরিয়ে ফেলে বলে অভিযোগ। আর সেসব দিয়ে বিলাসবহুল গাড়ি থেকে শুরু করে দামি মোবাইল, আইফোন, ল্যাপটপ, গয়না কিনে ফেলেন। হাতে রেখে দেন বহু নগদ অর্থ। মৌমিতা এবং মিঠুনকে কসবা ও লেকটাউন থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আর তারপর তাঁদের কাছ থেকে সবকিছু বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার নানা ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।