জামিন মিলবে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাকি জেল হেফাজতে যেতে হবে? এই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে গোটা রাজ্যে। কারণ পার্থ–অর্পিতার মামলায় রায়দান আপাতত স্থগিত রাখল আদালত। তবে দু’পক্ষের সওয়াল জবাব মন দিয়ে শুনেছেন বিচারক। একইসঙ্গে শুনানি চলাকালীন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ওঠা প্রভাবশালী তত্ত্ব খারিজ করতে জোর দেন তাঁর আইনজীবীরা।
ঠিক কী ঘটেছে আদালতে? আজ, শুক্রবার তাঁদের ব্যাঙ্কশাল কোর্টে তোলা হয়। সেখানে জোর সওয়াল– জবাব চলে। এখানে জেল হেফাজতের আবেদন করেন ইডির আইনজীবী। তৎক্ষণাৎ পার্থর আইনজীবীর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, ৩১টি এলআইসি–সহ অন্যান্য নথি সব ভুয়ো। একমাত্র রক্তের সম্পর্ক থাকলেই নমিনি করা যায়। অর্পিতার সঙ্গে কোন রক্তের সম্পর্ক নেই। যা কিছু পাওয়া গিয়েছে সব অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে। কেউ এসে দাবি করেনি পার্থ চট্টোপাধ্যায় চাকরির বিনিময়ে ঘুষ চেয়েছেন। এই নিয়ে কোন তথ্যপ্রমাণও নেই। প্রমাণ ছাড়া কাউকে দোষী সাব্যস্ত করা যায় না। তাঁর জামিন পাওয়া উচিত। তাঁর ৭২ বছর বয়স এবং নিয়মিত ওষুধ খেতে হচ্ছে। আমরা জামিন চাইছি।
তারপর ঠিক ঘটল সেখানে? এদিন আদালতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে প্রভাবশালী বলে জামিনের বিরোধিতা করেন ইডির আইনজীবীরা। তখন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবী কৃষ্ণচন্দ্র দাস পাল্টা আদালতকে জানান, পার্থ চট্টোপাধ্যায় আর মন্ত্রী নন। কোনও দলীয় পদেও নেই। তিনি এখন শুধুই একজন বিধায়ক। আর সেই পদ থেকেও ইস্তফা দিতে রাজি তিনি। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কোনও সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হয়নি। পার্থ একজন সাধারণ মানুষ। তাঁর কোথাও পালিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও নেই। তদন্ত যা হওয়ার হয়েছে। আর নতুন কোনও তথ্য পাওয়ার নেই। এই যুক্তিতে পার্থকে জামিন দেওয়া হোক।
ইডি কী জানিয়েছে আদালতকে? ইডি পার্থের ১৪ দিনের জেল হেফাজত চেয়ে আবেদন করে। পাল্টা পার্থের আইনজীবীরা জানান, পার্থের বাড়ি থেকে একটি চিরকুটও পাওয়া যায়নি। তখন ইডির আইনজীবী আদালতে জানান, এমএস অনন্ত টেক্সফ্যাব প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি সংস্থার খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। যার শেয়ার হস্তান্তর করা হয়েছে পার্থ–অর্পিতার আত্মীয়দের মধ্যে। ওই সংস্থার যে ঠিকানা নথিভুক্ত করা হয়েছে সেটা আসলে অর্পিতার বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাটের ঠিকানায়। এই দীর্ঘ সওয়াল–জবাব শুনে আপাতত পার্থ–অর্পিতার মামলার রায়দান স্থগিত রেখেছেন বিচারক।