নিজের খরচে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি হতে পারবেন। অনুমতি দিল আদালত। সোমবার প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর আইনজীবীর দাবি করেন যে রাজ্যের সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল এসএসকেএমে চিকিৎসা করিয়ে তিনি সুস্থ হয়ে উঠছেন না। তাই বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি হয়ে চিকিৎসা করাতে চান বলে আর্জি জানান পার্থ। সেই আর্জি গৃহীত হয়েছে। বিচারক জানিয়েছেন যে নিজের খরচে বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি হতে পারবেন পার্থ। নিজের ঝুঁকিতেই পার্থকে সেই পদক্ষেপ করতে হবে বলে জানিয়েছে আদালত।
আর যে এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে এখন অন্যত্র চলে যাচ্ছেন, সেখানে একাধিকবার ভরতি থেকেছিলেন পার্থ। এমনকী এসএসকেএমে ভরতি থাকা নিয়ে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) তরফেও প্রশ্ন করা হয়েছিল। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল যে কেন এসএসকেএমে ভরতি থাকতে চাইছেন পার্থ? এবার সেই হাসপাতাল থেকেই চলে যাচ্ছেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী।
গ্রেফতারির হলেই ‘নিরাপদ আশ্রয়স্থল’ এসএসকেএম? উঠেছিল প্রশ্ন
এমনিতে অতীতে এসএসকেএম হাসপাতালকে প্রভাবশালীদের ‘নিরাপদ আশ্রয়স্থল’ হিসেবে কটাক্ষ করেছেন বিরোধী নেতারা। বছরখানেক আগে কলকাতা হাইকোর্টে একটি মামলার শুনানির সময় আইনজীবীরা দাবি করেন, প্রভাবশালীদের কোনও ঘটনায় গ্রেফতার করা হলেই তাঁরা এসএসকেএম হাসপাতালে ভরতি হয়ে যান। সেই তালিকায় পার্থ, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, মদন মিত্র, 'কালীঘাটের কাকু' সুজয়কৃষ্ণ ভদ্ররাও আছেন। এসএসকেএম তাঁদের ‘নিরাপদ আশ্রয়স্থল’ হয়ে উঠেছে বলে দাবি করা হয়েছিল।
রিপোর্ট তলব করেছিল হাইকোর্ট
সেই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে এসএসকেএম কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্টও তলব করেছিল হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ। হাইকোর্ট জানতে চেয়েছিল যে এসএসকেএমে কতজন প্রভাবশালী ভরতি হয়েছেন? তাঁদের শারীরিক অবস্থার বিষয়েও তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছিল। যদিও প্রভাবশালী তত্ত্ব খারিজ করে দিয়েছিল রাজ্য সরকার। রাজ্যের যুক্তি ছিল, শারীরিক অবস্থার বিবেচনা করে হাসপাতালে ভরতি করানো হয়।
প্রায় ৩ বছর জেলবন্দী পার্থ
এমনিতে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রায় তিন বছর জেলে আছেন পার্থ। ২০২২ সালের জুলাইয়ে তাঁকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। পরবর্তীতে তাঁকে সিবিআইও গ্রেফতার করেছিল। দীর্ঘদিন ধরে বারবার জামিনের আবেদন করেও আদালত খালি হাতেই ফিরতে হয়েছে পার্থকে। তারইমধ্যে দিনকয়েক আগে শর্তসাপেক্ষে তাঁর জামিনের আর্জি মঞ্জুর করা হয়। কিন্তু কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের মামলায় এখনও জামিন পাননি পার্থ। ফলে তাঁকে জেলেই থাকতে হচ্ছে।
তারইমধ্যে বিভিন্ন অসুখে ভুগতে থাকেন পার্থ। সোমবার তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে ভরতি করানো হয়। বুধবার সন্ধ্যা-রাতের দিকে তাঁকে এসএসকেএমেরই আইসিইউতে স্থানান্তরিত করা হয়। আর সেখান থেকে এবার বেসরকারি হাসপাতালে যাচ্ছেন পার্থ।