নিউ নর্মালে যাত্রী পরিষেবা দিতে স্মার্ট কার্ডের উপর জোর দিয়েছিল মেট্রো কর্তৃপক্ষ। এমনকী করোনা পরিস্থিতিতে স্পর্শজনিত সংক্রমণের আশঙ্কা কমাতে টোকেনের বদলে শুধুমাত্র স্মার্ট কার্ডের ব্যবস্থা কার্যকর করেছিল। কিন্তু শহরতলির ট্রেন চালু হওয়ার পরে যাত্রীদের একাংশ স্মার্ট কার্ডে যাতায়াতের পরে তা সরাসরি ফিরিয়ে দিয়ে যাচ্ছেন কর্তব্যরত স্টেশন মাস্টারের ঘরে। দিনের দিন কার্ড কিনে ব্যবহারের পরে তা ফিরিয়ে দিয়ে টাকা ফেরত নেওয়া যাত্রীর সংখ্যা বাড়ছে মেট্রোয়। এই পরিস্থিতি কিভাবে ম্যানেজ করবেন তাঁরা তা বুঝে উঠতে পারছে না।
মেট্রো যাত্রী সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে। যা নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন মেট্রো কর্তারা। গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনগুলির ক্ষেত্রে দৈনিক ৪০–৫০ জন যাত্রী আসছেন স্মার্ট কার্ড ফেরত দিতে। বিশেষ করে প্রান্তিক স্টেশনে ওই সংখ্যা প্রায়ই ১০০ ছাড়িয়ে যাচ্ছে বলে খবর। সংক্রমণ ঠেকাতে ফেরত পাওয়া স্মার্ট কার্ড জীবাণুমুক্ত করা নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন মেট্রো কর্তারা। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, ঢাকের দায়ে মনসা বিক্রি হয়ে যেতে বসেছে।
এখন প্রশ্ন উঠছে, যাত্রীদের এমন প্রবণতা কেন? মেট্রো সূত্রে খবর, যাতায়াতের সুবিধার কারণে স্মার্টফোন ব্যবহারকারী যাত্রীরা মেট্রোকেই এগিয়ে রাখছেন। মেট্রোর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় ই–পাসের জন্য অপেক্ষাও কমেছে। এই অবস্থায় স্মার্টফোনে দক্ষ, অথচ মেট্রোর নিয়মিত যাত্রী নন, এমন লোকজনই স্মার্ট কার্ড ফিরিয়ে দিচ্ছেন বেশি। স্মার্ট কার্ডের ব্যালান্স বাবদ যে টাকা ফেরত পাওয়া যাচ্ছে, তাতে ওই যাত্রীদের ভাড়াতেও সাশ্রয় হচ্ছে।
মেট্রোর এক আধিকারিক জানান, ন্যূনতম ১০০ টাকা দিয়ে স্মার্ট কার্ড কিনলে সিকিওরিটি ডিপোজিট লাগে ৬০ টাকা। বাকি ৪০ টাকার উপরে ১০ শতাংশ ছাড় যুক্ত হয়ে ব্যালান্সের অঙ্ক দাঁড়ায় ৪৪ টাকা। কোনও যাত্রী ১০ টাকার দূরত্বে যাতায়াত করলে ভাড়া বাবদ তাঁর মোট খরচ হচ্ছে ২০ টাকা। যাত্রা শেষে তিনি স্মার্ট কার্ড ফেরত দিচ্ছেন, তখন ব্যালান্স থাকছে ২৪ টাকা। ওই টাকার ১০ শতাংশ কেটে নিয়ে বাকি টাকা যাত্রীকে ফিরিয়ে দেওয়াই নিয়ম। ওই টাকার ১০ শতাংশ ২.৪০ টাকা হলেও যাত্রীর থেকে কাটা হচ্ছে দু’টাকা। যাত্রী ২২ টাকা ছাড়াও ফেরত পাচ্ছেন সিকিওরিটি ডিপোজিটের ৬০ টাকা। ফলে তাঁর মোট প্রাপ্তি ৮২ টাকা।
আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা সত্ত্বেও সংক্রমণ ঠেকাতে সীমিত সংখ্যক যাত্রী নিয়ে পরিষেবা চালানোর পরিকল্পনা করেছিলেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এখন এমন পরিস্থিতির মোকাবিলায় টোকেন ফিরিয়ে আনার কথাও ভাবছেন তাঁরা বলে সূত্রের খবর।