পুরুষ আয়ার মারে রোগীমৃত্যু অভিযোগে তুলকালাম কাণ্ড ঘটে গেল আর জি কর হাসপাতালে। অভিযোগ, ওই হাসপাতালের পুরুষ আয়া রোগীকে মারধর করায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে। যদিও হাসপাতালের অন্যান্য কর্মীরা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁদের দাবি, শয্যা থেকে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে ওই রোগীর। ইতিমধ্যেই টালা থানায় অভিযোগ দায়ের হওয়ায়, তদন্তে নেমেছে পুলিশ। অন্তর্তদন্তের আশ্বাসও দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ওই রোগীর নাম গোপাল দাস (৫০)। পেশায় অটোচালক ছিলেন তিনি। দত্তপুকুরের বাসিন্দা গোপালবাবু। তিনি বামুনগাছি—উল্টোডাঙা রুটে অটো চালাতেন। গত ৩ জুন কাজ সেরে বাড়ি ফেরার পথে দত্তপুকুর ও বামুনগাছির মধ্যে একটি গাড়ি গোপালবাবু অটোয় ধাক্কা মারে। দুর্ঘটনায় পাঁজরে আঘাত পেয়েছিলেন গোপাল। তাছাড়া বাঁ হাতের কনুইয়ে চোট লেগেছিল তাঁর। বারাসতের একটি হাসপাতালে ১৭ দিন ধরে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। পরে ১৪ জুন অবস্থার অবনতি হওয়ায় কলকাতার আর জি কর হাসপাতালে নিয়ে এসে ভরতি করানো হয় তাঁকে। তারপর গোপালবাবুর বুকের এক্স-রে করানো হয়। রিপোর্টে চিকিৎসকরা দেখেন যে, তাঁর বুকে জল জমে গিয়েছে। সেখানে তাঁর অস্ত্রপচারও হয়। কয়েকদিন আইসিইউ তে রেখে পরে তাঁকে অর্থপেডিকের পুরুষ ওয়ার্ডে চিকিৎসার জন্য স্থানান্তর করা হয়। গোপালের স্ত্রী পূর্ণিমা দাসের অভিযোগ, ওই ওয়ার্ডের এক পুরুষ আয়া তাঁকে খুব বকাবকি করত। এমনকী, তাঁকে মারধরও করা হয়েছে বলে অভিযোগ তাঁর।
ঘটনা প্রসঙ্গে আরজি করের ডেপুটি সুপার সুপ্রিয় চৌধুরী বলেন, ‘পরিবারের তরফে লিখিত অভিযোগ পাইনি। তবে ঘটনার অন্তর্তদন্ত করা হবে।’ তবে আরজি করের সুপার মানস বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে সকাল পর্যন্ত অভিযোগ দায়ের হয়নি বলে জানা গিয়েছে।
মৃত ওই রোগীর পরিবারের বক্তব্য, গোপালকে খাবার দিয়ে আসতেন তাঁরা। তখন উনি অভিযোগ করতেন, তাঁকে বিমল ও পাপ্পু নামের দু’জন আয়া প্রচন্ড মারধর করে। বুধবার সকালে মৃত্যু হয় গোপালের। পরিবারের অভিযোগ, রাতে রোগী খাট থেকে পড়ে গিয়েছিলেন। সেই কারণে তাঁকে আয়ারা মারধর করায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এই নিয়ে টালা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন গোপালের বাড়ির লোকজন। ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। কিন্তু ওই বিভাগের অন্যান্য আয়ারা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁদের বক্তব্য, ‘রাতে খাট থেকে পড়ে গিয়ে থাকতে পারেন তিনি। তাতেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।’