এবার বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেখানো পথেই হাঁটলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের ইস্তেহারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্যতম প্রতিশ্রুতি ছিল স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড। আর সেটা তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পরই সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। এই কার্ডের মাধ্যমে ন্যূনতম সুদে ১০ লক্ষ টাকা শিক্ষাঋণের ব্যবস্থা করেছে রাজ্য সরকার। এবার এই একই পথে হেঁটে ‘পিএম বিদ্যালক্ষ্মী’ প্রকল্প চালু করল মোদী সরকার। এই প্রকল্পের মাধ্যমেও ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাবেন পড়ুয়ারা। তবে এক্ষেত্রে ঋণের টাকার ৭৫ শতাংশের গ্যারান্টার থাকবে কেন্দ্র। যেখানে রাজ্য সরকার স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডে ১০০ শতাংশ টাকার গ্যারান্টার থাকে। এই গোটা বিষয়টি নিয়ে এবার বাংলা মডেলকে যে কেন্দ্রীয় সরকার অনুসরণ করছে সেটা তুলে ধরলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।
আজ, বৃহস্পতিবার গোটা বিষয়টি রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী তুলে ধরেন এক্স হ্যান্ডেলে। আর সেখানেই কেন্দ্রের ‘পিএম বিদ্যালক্ষ্মী’ প্রকল্প যে বাংলার অনুকরণে করা সেটা তুলে ধরেছেন তিনি। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের খরচ খুব বেশি। তাই মেধা থাকলেও অনেকের সাধ্যের বাইরে থাকে উচ্চশিক্ষা। সে কথা ভেবেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার চালু করেছিল ‘স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড’। আর এবার একই পথে হেঁটে পড়ুয়াদের জন্য বিশেষ সুবিধা দেওয়ার কথা ঘোষণা করল মোদী সরকার। কী আছে প্রধানমন্ত্রীর নয়া প্রকল্পে? বার্ষিক ৮ লক্ষের নিচে আয়ের পরিবারের সন্তানদের উচ্চশিক্ষার জন্য কোনও কো–ল্যাটারাল এবং গ্যারান্টার ছাড়াই ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণের সুবিধা মিলবে। সুদে মিলবে ৩ শতাংশ ছাড়।
আরও পড়ুন: ‘উনি এই রাজ্যের ইতিহাস ভূগোল জানেন না’, কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতিকে আক্রমণ কুণালের
আবার যে পরিবারগুলির বার্ষিক আয় সাড়ে ৪ লক্ষ টাকা তাদের ক্ষেত্রে পুরো ‘ইন্টারেস্ট সাবভেনশন’ থাকছে। যার অর্থ— ঋণগ্রহীতাকে সুদ দিতে হবে না। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই ঋণে ৩ শতাংশ সুদে ভর্তুকি দেবে কেন্দ্রীয় সরকার। সরকারি প্রতিষ্ঠানে পঠনপাঠনের জন্য এই ঋণ দেওয়া হবে। পড়ুয়ারা যে প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হবেন সেটার এনআইআরএফ র্যাঙ্কিং সর্বভারতীয় স্তরে একশোর মধ্যে হতে হবে। প্রত্যেক বছর ১ লক্ষ ছাত্রকে ঋণ দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী বিদ্যালক্ষ্মী যোজনা পাওয়ার জন্য অনলাইনে আবেদন করতে হবে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব বলেন, ‘এই প্রকল্পে ঋণ পেতে গেলে গ্যারান্টার লাগবে না। প্রধানমন্ত্রী চান, কোনও মেধাবী পড়ুয়া যেন উচ্চশিক্ষা থেকে বঞ্চিত না হয়।’
এছাড়া স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড উচ্চশিক্ষার জন্য ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ মেলে। এই কার্ডের সবচেয়ে বড় সুবিধা হল, ঋণের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারই গ্যারান্টার। সুদের একটা বড় অংশও দেয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। তাই ব্রাত্য বসু আজ এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, ‘বাংলার যে মডেল তৈরি হয়েছে সেটাই নরেন্দ্র মোদীর কেন্দ্রীয় সরকার অনুসরণ করছে। কেন্দ্রীয় সরকারের পিএম বিদ্যালক্ষ্মী প্রকল্প, বাংলার স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের লাইনে তৈরি হয়েছে। বাংলা আবার কেন্দ্রকে অনুপ্রাণিত করল।’