সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব ডা. অতুল গোয়েল চিঠি দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ-সহ সব রাজ্যকে একটি করে পয়জন ইনফরমেশন সেন্টার বা বিষ তথ্যকেন্দ্র গড়ার প্রস্তাব দিয়েছেন। বাংলায় যেকোনও দুটি সরকারি হাসপাতাল অথবা দুটি মেডিক্যাল কলেজে এই ইনফরমেশন সেন্টার করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সেই প্রস্তাব মেনেই রাজ্যে দুটি বিষ তথ্যকেন্দ্র বা পয়জন ইনফরমেশন সেন্টার গড়তে চলেছে রাজ্য সরকার। যদিও আগে আরজি করে ছিল এই পয়জন ইনফরমেশন সেন্টার। তবে সেটি বন্ধ হয়ে যায়। নতুন করে যে দুটি বিষ তথ্য কেন্দ্র গড়া হচ্ছে সেগুলির মধ্যে একটি হচ্ছে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ এবং অন্যটি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে।
আরও পড়ুন: আগে বন্ধ হয়ে গিয়েছে, ফের কেন্দ্রের বার্তায় শুরু হতে পারে পয়জন ইনফরমেশন সেন্টার
সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই দুই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে এই তথ্যকেন্দ্র গড়ার জন্য মেডিসিন, পেডিয়াট্রিক্স, কমিউনিটি মেডিসিন, অ্যানাস্থেশিয়া ও ক্রিটিক্যাল কেয়ারের শিক্ষক–চিকিৎসক এবং ফরেন্সিক মেডিসিনের প্রধানদের নিয়ে বিশেষজ্ঞ কমিটি তৈরি করতে বলা হয়েছে। শুক্রবার এই মর্মে নির্দেশ জারি করেছে স্বাস্থ্য দফতর। এই তথ্যকেন্দ্রের মাধ্যমে সাপের বিষ সম্পর্কে তথ্য ও সাপে কাটা রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা সংক্রান্ত তথ্য পাবেন সাধারণ মানুষ। এই উদ্যোগকে সাধুবাদ চিকিৎসকের অনেকেই। আবার আরজি করে না করার জন্য অনেকেই এর সমালোচনা করছেন।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে গড়ে উঠেছিল পয়জন ইনফরমেশন সেন্টার। দেশের সরকারি হাসপাতালগুলির মধ্যে এটিই ছিল প্রথম পয়জন ইনফর্মেশন সেন্টার। ২০২২ সালে দেশের সেরা পয়জন ইনফর্মেশন সেন্টারের সন্মান পেয়েছিল কেন্দ্রটি। কিন্তু, কর্তৃপক্ষ গুরুত্ব না দেওয়ায় ২০২৩ সালে বন্ধ হয়ে যায় সেই কেন্দ্রটি।
কেন্দ্রের তরফে পয়জন ইনফরমেশন সেন্টার করার প্রস্তাব দেওয়ার পর অনেকেই ভেবেছিলেন আরজি করে এই কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। কারণ এখানেই প্রথম এই কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছিল। ২০১৮ সাল থেকে শুরু হওয়ার পর আরজি করের কেন্দ্রটিতে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ টোল ফ্রি নম্বরে ফোন করে সাপের কামড়-সহ নানা ধরনের বিষের বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়েছিলেন।
তবে শুধু সাপের বিষই নয়, ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার চটজলদি চিকিৎসা, বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক খেয়ে ফেললে সঙ্গে সঙ্গে কী করা উচিত, বোলতা, মৌমাছি-সহ বিভিন্ন ধরনের পতঙ্গের কামড়ে কী করণীয়, বিষাক্ত মাকড়শা ও অন্যান্য কীটের কামড়ে কী করণীয় ? সেই সব তথ্য এই টোল ফ্রি নম্বরে ফোন করে মানুষ জানতে পারতেন।
অনেকের বক্তব্য, আরজি করের এই কেন্দ্রকে পুনরুজ্জীবিত না করে কেন সরকার নতুন দু’টি কেন্দ্র গড়তে যাচ্ছে। শুধু তাই নয় কলকাতার বদলে ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজ কিংবা বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে এই তথ্য কেন্দ্র গড়ে তোলা প্রয়োজন বলে মনে করছেন অনেকেই। তাদের বক্তব্য, এই এলাকাগুলিতে সাপের উপদ্রব বেশি। ফলে বেশি মানুষ উপকৃত হতেন।