মাসখানেক আগে সেক্সটরশন চক্রের শিকার হয়েছিলেন কলকাতার একটি বেসরকারি সংস্থার এক কর্তা। সেই ঘটনায় আরও একজনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃত যুবকের নাম অভিষেক সিং শেখাওয়াত। রাজস্থানের জয়পুর থেকে ওই যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, ওই যুবক এমবিএ–র চূড়ান্ত বর্ষের ছাত্র। বাবার মৃত্যুর পর পরিবারে আর্থিক সংকট দেখা দেওয়ার পরেই এই চক্রে নাম লিখিয়েছিল ওই যুবক। গত সোমবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হয় ওই যুবককে। বিচারক ৩০ জুন পর্যন্ত তার পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বেসরকারি সংস্থার ওই কর্তার মোবাইলে মাসখানেক একটি ভিডিয়ো কল আসে। ফোনের ওপারে ছিল এক নগ্ন মহিলার ছবি। সেইসঙ্গে ওই ভিডিয়োর স্ক্রিন রেকর্ডিং করা হয়। পরে এক জালিয়াতি ওই ব্যক্তিকে মেসেজ করে নিজেকে পুলিশ কর্তা দাবি করে এবং সেই ভিডিয়ো ভাইরাল করে দেওয়ার হুমকি দেয়। এরপর ওই ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা চাইতে থাকে জালিয়াতরা। টাকা না দিলে সেই ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ার ভাইরাল করে দেওয়ার হুমকি দেয়।
অভিযোগকারী লোকলজ্জার ভয়ে জালিয়াতিদের চাহিদা মতো দফায়-দফায় তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রায় ৬৭ লক্ষ টাকা পাঠান। শেষে ওই ব্যক্তি সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ জানান। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ উত্তরপ্রদেশ থেকে অমিত কুমার নামে এক যুবককে প্রথমে গ্রেফতার করে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে এই ঘটনায় অন্যান্য অভিযুক্তরা রাজস্থানে রয়েছে।
সেই সূত্র ধরে পুলিশ রাজস্থানের জয়পুরের ছান্দওয়াজি এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে অভিষেককে গ্রেফতার করে। জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঁচ লক্ষ টাকা জমা পড়েছিল। এছাড়াও তার নামে একাধিক ই-ওয়ালেটেও টাকা জমা পড়েছিল। সেই টাকা আরও বেশ কয়েকজন জালিয়াতের অ্যাকাউন্টে গিয়েছিল। পুলিশের অনুমান, এই চক্রের সঙ্গে আরও অনেকেই যুক্ত আছে।
অভিষেক জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে, এমবিএ–র ফাইনাল বর্ষের পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল। তার বাবা মারা গিয়েছে। পরিবারের আর্থিক সমস্যার কারণে নাকি সে জালিয়াতির পথ বেছে নিয়েছিল। আর্থিক সমস্যা তার এমবিএ করার পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তাই টাকা জোগাড় করতে সে নাম লিখিয়েছিল এই চক্রে।
যদিও ওই যুবক আদৌও সত্যি বলছে কিনা, তা যাচাই করে দেখছেন গোয়েন্দারা। পুলিশ তাকে জেরা করে আরও বেশ কয়েকজনের নাম জানতে পেরেছে। এই রাজ্যের আরও বেশ কয়েকজন এই চক্রের সঙ্গে জড়িত রয়েছে বলে মনে করছে পুলিশ। আপাতত ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তাদের নাম জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।