সল্টলেকে আবারও ভুয়ো কল সেন্টারের হদিশ পেল পুলিশ। সেখানে তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতরা মূলত সফটওয়্যার এবং ই কমার্সের প্রতিনিধি হিসেবে নিজেদের পরিচয় দিয়ে মার্কিন এবং স্পেনের নাগরিকদের সঙ্গে প্রতারণা করত। গোপন সূত্রে সেই খবর পেয়ে পুলিশ সল্টলেকের একটি বাণিজ্যিক কমপ্লেক্সের হানা দিয়ে তাদের গ্রেফতার করেছে। পাশাপাশি তাদের কাছ থেকে বেশ কয়েকটি কম্পিউটার, ল্যাপটপ, মোবাইল এবং সিম কার্ড বাজেয়াপ্ত করেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, কল সেন্টারের দুজন ডিরেক্টর সুমিত মাঝি এবং হাফিজুর রহমান সরদারকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা বিভিন্নভাবে মার্কিন এবং স্পেনের নাগরিকদের অর্থ দিতে বাধ্য করত। ওই কল সেন্টারের নাম হল উই কেয়ার সলিউশন প্রাইভেট লিমিটেড।
বিধাননগর সাইবার থানার এক আধিকারিক বলেন, ‘আমরা একটি গোপন সূত্রের খবর পেয়ে বুধবার ওই অফিসে অভিযান চালিয়েছি এবং একটি দলকে খুঁজে পেয়েছি। তারা বিদেশি নাগরিকদের ফোন এবং ল্যাপটপের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে তাদের সঙ্গে প্রতারণা করত। ওই কল সেন্টার পরিচালনা করত সুমিত মাঝি এবং হাফিজুর রহমান সরদার। কল সেন্টারের কর্মীরা মূলত স্পেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের কাছে সফটওয়্যার কোম্পানি এবং ই-কমার্স জায়ান্টের প্রতিনিধি হিসেবে পরিচয় দিত। আর তারপরেই তাদের সঙ্গে করা হত প্রতারণা।
কীভাবে করা হত প্রতারণা?
পুলিশ জানিয়েছে, মার্কিন এবং স্পেনের নাগরিকদের ভুল বুঝিয়ে তাদের ডিভাইসে একটি অ্যাপ ডাউনলোড করতে বলত। আর সেই অ্যাপটি একবার ডাউনলোড করলেই একটি পাসকোড শেয়ার করতে বলা হত। সেই কোডটি শেয়ার করলেই ওই নাগরিকদের ফোন বা ল্যাপটপে অ্যাক্সেস করতে পারত প্রতারকরা। আর তারপরেই বিভিন্নভাবে টাকা আদায় করত। প্রতারকরা যে অফিস ভাড়া নিয়েছিল সেই অফিসের আয়তন ১২০০ বর্গফুট। তবে সেই অফিসের মালিকের সঙ্গে চুক্তির কোনও দলিল দেখাতে পারেনি। এমনকী অফিসের কোনও নথিও দেখাতে পারেনি প্রতারকরা।
ধৃতদের বিরুদ্ধে প্রতারণা, জালিয়াতি, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র-সহ বিভিন্ন ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। শৃতেরা সোনারপুর, বাগুইআটি, নোদালহালি, হাওড়া, চিটপুর এবং আমহার্স্ট স্ট্রিটের বাসিন্দা। এই প্রথম নয়, কলকাতায় ভুয়ো কল সেন্টারের মাধ্যমে এর আগেও বিদেশি নাগরিকদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে।
সম্প্রতি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তদন্তকারী সংস্থা এফবিআই-এর মাধ্যমে একটি অভিযোগের ভিত্তিতে কলকাতা পুলিশ ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে। তারা অ্যান্টি-ভাইরাস সফটওয়্যার কোম্পানির কর্মী পরিচয় দিয়ে চারজন প্রবীণ মার্কিন নাগরিককে প্রতারণা করেছিল। প্রতারিত তিনজনের মধ্যে একজন ৭৬ বছর বয়সি মহিলা। সম্প্রতি ভিডিয়ো কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে তাঁরা আলিপুর আদালতে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে নিজেদের বয়ান পেশ করেছিলেন।
এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup