ট্যাব দুর্নীতি নিয়ে এই মুহূর্তে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। একাধিক জেলার বেশ কয়েকটি স্কুলের পাশাপাশি কলকাতার সরশুনার একটি স্কুলেও পড়ুয়াদের ট্যাব কেনার টাকা ঢুকেছে অন্য অ্যাকাউন্টে। সেই ঘটনায় তদন্তে নেমে পুলিশ দুজনকে গ্রেফতার করেছে। তাদের উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া থেকে পাকড়াও করেছে পুলিশ। অবাক করার বিষয় হল ধৃতদের মধ্যে একজন হলেন পেশায় কৃষক এবং অন্যজন হলেন চা শ্রমিক। ধৃতদের নাম যথাক্রমে সরিফুল ইসলাম এবং কৃষ্ণপদ বর্মন। কীভাবে তাদের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকল তা নিয়ে হতবাক পুলিশ। তবে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন সাইবার ক্যাফের মাধ্যমেই দুজনে ট্যাবের টাকা জালিয়াতি করেছেন।
আরও পড়ুন: ট্যাব দুর্নীতির তদন্তে সামনে এল চোখ ছানাবড়া করে দেওয়া 'জিনিস', হতবাক আধিকারিকরা
সরশুনার ওই স্কুলে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির ৩১ জন পড়ুয়া ট্যাবের টাকা পায়নি বলে অভিযোগ ওঠে। তার ভিত্তিতে স্কুলের তরফে সরশুনা থানায় মঙ্গলবার অভিযোগ দায়ের করা হয়। তদন্তে নেমে কলকাতা পুলিশ জানতে পারে দুজনের নাম। আরও জানতে পারে যে তারা দুজনেই উত্তর দিনাজপুরের বাসিন্দা। এরপরে ইসলামপুর থানা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। তার ভিত্তিতে ইসলামপুর থানার পুলিশ দুজনকে গ্রেফতার করে। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, সাইবার ক্যাফের মাধ্যমেই তারা ট্যাবের টাকা জালিয়াতি করেছিলেন। তবে এই চক্রের সঙ্গে আরও অনেকে জড়িত বলে মনে করছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, এই মুহূর্তে একাধিক জেলায় ট্যাবের টাকা পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে না থাকার অভিযোগ সামনে এসেছে। যার মধ্যে প্রথম অভিযোগ উঠেছিল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা থেকে। এরপর একে একে বর্ধমান, উত্তর ২৪ পরগনা এবং কলকাতার স্কুলেও একইভাবে পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে টাকা না ঢোকার অভিযোগ ওঠে। ৩০০ এর বেশি পড়ুয়ার অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকেনি বলে অভিযোগ। অন্য অ্যাকাউন্টে টাকা যাওয়ার পাশাপাশি ওয়েবসাইট হ্যাক করেও টাকা হাতানোর অভিযোগ ওঠে। সেই ঘটনার পরে তৎপর হয় শিক্ষাদফতর। কেন আবেদনকারীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ঠিকমতো টাকা যাচ্ছে না তা খতিয়ে দেখা শুরু করে শিক্ষা দফতর। পুলিশ এবং অন্যান্য আধিকারিকদের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ।
এখনও পর্যন্ত এই ঘটনার তদন্তে পুলিশ মোট ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে। যার মধ্যে ৫ জন উত্তর দিনাজপুরের এবং পাঁচ জন মালদার বাসিন্দা। প্রতিটা ক্ষেত্রেই সাইবার ক্যাফের যোগ ছিল বলে জানা গিয়েছে।