ছাত্রকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছিল নাচের শিক্ষকের বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগের পরেই গ্রেফতারির ভয়ে সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকায় পালিয়ে বেড়াচ্ছিল শিক্ষক। কিন্তু, বাঘের হুঙ্কার শুনে ভয়ে আর সুন্দরবনে থাকতে পারেনি অভিযুক্ত। শেষ পর্যন্ত পুলিশের হাতেই ধরা দিল শিক্ষক। আলিপুরের গোপালনগর থেকে ওই শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতের নাম অলোক ঘরামি ওরফে অলোক দে।
আরও পড়ুন: বারুইপুরের কোচিং সেন্টারে খুনের হুমকি, নাবালিকা ছাত্রীকে ধর্ষণ! গ্রেফতার শিক্ষক
জানা গিয়েছে, অলোক লেক থানা এলাকার গোবিন্দপুর রোডের বাসিন্দা। কলকাতার বিভিন্ন এলাকার নাবালক নাবালিকাদের নাচ শিখিয়ে থাকে অলোক। সেখানেই ১০ বছরের এক নাবালককে নাচ শেখাতে গিয়ে যৌন হেনস্থা করে অলোক। অভিযোগ, বেশ কয়েকবার ছাত্রকে এক বান্ধবীর বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে গিয়ে যৌন নিগ্রহ করে। আর নাবালক যাতে কাউকে যৌন নির্যাতনের কথা বলে না দেয় তার জন্য তাকে হুমকি দিয়েছিল অলোক। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়।
এমন ঘটনায় কার্যত আতঙ্কে ছিল ওই নাবালক। তার মধ্যে অস্বাভাবিক লক্ষণ দেখতে পেয়ে সন্দেহ হয় অভিভাবকদের। এরপর তারা কারণ জানতে নাবালককে বারবার জিজ্ঞাসা করেন। শেষ পর্যন্ত নাবালক তার অভিভাবকদের সবকিছু খুলে বলে। বিষয়টি জানতে পেরেই কার্যত চমকে ওঠেন তারা। এরপর লেক থানায় নাচের শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন নাবালকের বাবা-মা। ঘটনায় নাচের শিক্ষকের বিরুদ্ধে পকসো আইনে মামলা রুজু করে পুলিশ। এর পরেই শুরু হয় তদন্ত।
এদিকে, পুলিশের তদন্তের বিষয়টি জানতে পেরেই পালিয়ে যায় ওই শিক্ষক। পুলিশ জানিয়েছে, তার বাড়িতে একটি কুকুর রয়েছে। সেই কুকুরের দেখা শোনার জন্য এক মহিলাকে দায়িত্ব দিয়েছিল। মাঝেমধ্যেই ফোন অন করে অনলাইনে টাকা পাঠাত অলোক। সেই সূত্র ধরেই পুলিশ জানতে পারে যে সুন্দরবনে গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে শিক্ষক। এরপর সুন্দরবনে অলোককে ধরতে হানা দেয় লেক থানার পুলিশ। এদিকে, লেনদেনের সূত্র ধরে পুলিশ জানতে পারে যে সুন্দরবন এলাকায় পরিচিতদের বাড়িতে পালিয়ে বেড়াচ্ছে সে।
এদিকে, সুন্দরবনে একটি নাচের দল পৌঁছয়। তাদের সঙ্গেও সজনেখালিতে কয়েকদিন থাকে অলোক। আর সেই সময় অলোকের মনে দানা বাঁধে বাঘের আতঙ্ক। জানা যায়, সুন্দরবনের জঙ্গলের কাছে একটি গ্রামে থাকার সময় সে ঘন ঘন বাঘের হুঙ্কার শুনতে পেয়েছিল। এরপর আতঙ্কে কার্যত রাতে পারেনি সে। অভিযুক্ত ঠিক করে যে বাঘের পেটে যাওয়ার থেকে পুলিশের হাতে ধরা পড়া ভালো। এরপর সকাল হতেই সেখান থেকে কলকাতায় পালিয়ে আসে। শেষে গোপালনগর থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।