বড়সর প্রতারণাচক্রের হদিশ পেল পুলিশ। বারাসতে। একটি ভুয়ো কল সেন্টার থেকে ফোন করা হত। লোন দেওয়ার নাম করে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ। রীতিমতো অফিস খুলে চলত এই প্রতারণার ফাঁদ। অভিযানে নেমে ৬জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। বাজেয়াপ্ত ৩৬টি মোবাইল। দুটি ল্যাপটপ ও প্রচুর নথি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ।
এবার প্রশ্ন গোটা বিষয়টি ঠিক কীভাবে পরিচালনা করা হত? জানলে অবাক হবেন আপনিও।
অ্যাডিশনাল এসপি ( জোনাল) বারাসত পুলিশ জেলা স্পর্শ নিলাঙ্গি জানিয়েছেন, আমার কাছে একটা তথ্য় এসেছিল স্টার মলের উলটো দিকে একটা কলসেন্টার চালানো হচ্ছে। ওরা কিছু অবৈধ কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে। বারাসত থানা সাইবার থানার টিম ওখানে গিয়ে খোঁজ নেয়। বারাসত এসডিপিও পরে গিয়ে অভিযানে নামেন। ওখান থেকে জানা গিয়েছে ৩৪জন কর্মী কাজ করতেন। ওদের কাজ হল বিভিন্ন নম্বরে সাধারণ মানুষকে ফোন করে লোন অফার করে। এরপর লোনের নাম করে টাকা তুলে নেয়। এরা সাইবার প্রতারণার সঙ্গে যুক্ত। ওদের জেরা করে কাজের পুরোটা জানা গিয়েছে। এরা কীভাবে কাজ করে?
তিনি আরও বলেন, ওরা ছোট মোবাইল ফোন রাখত। ৩৬টি ছোট ফোন। কিছু স্মার্ট ফোন আছে। প্রথমে কিছু ফোন নম্বর থেকে যে কোনও একটা বেছে নেয়। এরপর শেষ নম্বরটা বদলে দেয়। এরপর তালিকা বানায়। এরপর সেই তালিকা দেখে ফোন করে আইডিএফসি ব্যাঙ্কের নাম করে ফোন করে। লোন অফার করে। কম সুদের হার বলে লোন অফার করে। এরপর কেউ যখন আগ্রহ দেখায় তখন কাগজপত্রের নাম করে ওরা একের পর এক টাকা চাইতে থাকে। আরবিআইয়ের লোগো ব্যবহার করে কিছু ভুয়ো নথি তৈরি করত। এমনকী কীভাবে কথা বলতে হবে সেটা তারা কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিত। রীতিমতো সেখানে কর্মী নিয়োগ করা হত। এমনকী স্ক্রিপ্টও আগে থেকে রেডি করা থাকত। সেই অনুসারে কথাবার্তা বলত ওরা। কোন সুদে অফার করতে হবে সেসব ওরা আগে থেকেই ঠিক করে রাখত। কিছু ভাড়া নেওয়া ব্যাঙ্ক অ্য়াকাউন্ট থাকত। একাধিক অ্য়াকাউন্টে টাকা ট্রান্সফার করা হত। এরপর শেষ পর্যন্ত নিজের অ্য়াকাউন্টে টাকা নিত ওই চক্রের পান্ডা। এরপর সেখান থেকে টাকা তুলে নিত।
কীভাবে সতর্ক হবেন?
তিনি জানিয়েছেন, এরা মূলত কিছু লোভ দেখাবে। প্রথমে ছোট অ্য়াকাউন্ট থেকে শুরু করবে। ৫০০ টাকা থেকে শুরু করবে। এরপর লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়ে নেবে। তারপর বুঝতে পারবেন এটা প্রতারণা হচ্ছে