বিধানসভা নির্বাচন বাংলায় এখনও একবছরের বেশি সময় বাকি। কিন্তু তার আগে থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাদের খুন করা হচ্ছে। এইসব খুন বা হামলার পিছনে কি মদত রয়েছে রাজনীতির? রাজ্য–রাজনীতিতে এখন এই প্রশ্ন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। কসবা এলাকায় কাউন্সিলরকে খুনের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। যদিও তা ভেস্তে যায়। কিন্তু মালদায় তা সফল হয়েছে। এইসব কারণে নতুন করে ১৭ দফা নির্দেশিকা জারি করলেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা। শুক্রবার কলকাতার সব থানার ওসিদের এবং ডিসিদের কাছে এই লিখিত নির্দেশিকা পৌঁছে গিয়েছে।
নগরপালের পাঠানো নির্দেশিকায় উল্লেখ করা হয়েছে, কলকাতার নেতা–মন্ত্রী থেকে বিধায়ক–সাংসদ এবং কাউন্সিলরদের মতো জনপ্রতিনিধিদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নতুন করে পর্যালোচনা করতে হবে। তারপর পুলিশ কমিশনারকে রিপোর্ট দেবেন সংশ্লিষ্ট ডিসি ও স্পেশাল ব্রাঞ্চ। জনপ্রতিনিধিদের নিরাপত্তা পর্যালোচনার উপর বেশি জোর দেওয়া হয়েছে। কারণ জনপ্রতিনিধিরা দুষ্কৃতীদের টার্গেট হচ্ছেন। তাই জনপ্রতিনিধিদের নিরাপত্তা নতুন করে পর্যালোচনা করা প্রয়োজন। মালদার দুলাল সরকার খুনের ঘটনার পর এই নির্দেশিকা নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ।
আরও পড়ুন: এবার খাস কলকাতায় পানীয় জল বন্ধ থাকবে, কতদিন থমকে? ঘোষণা করলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম
খাস কলকাতার কসবায় ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়েছিল। এই ঘটনা নিয়ে রাজ্য–রাজনীতি তোলপাড় হয়ে যায়। যদিও ভাগ্যের জোরে বেঁচে যান ওই কাউন্সিলর। এই ঘটনার পর তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা ব্যর্থতা নিয়ে সরবও হয়েছিলেন ফিরহাদ হাকিম। এমনকী ২ জানুয়ারি মালদায় খুন হন তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলার। তখন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিতে দেখা গিয়েছিল এবং তারপর নতুন করে কলকাতার পুলিশ কমিশনারের এই দফাওয়ারি নির্দেশিকা বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
ওই ১৭ দফার নির্দেশিকায় পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা মহানগরীতে বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্রের রমরমা বন্ধ করতে থানার ওসিদের এবং এসটিএফকে সতর্ক থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন। একইসঙ্গে নগরপাল রাজ্য সরকারের জমি দখল ঠেকাতে থানার ওসিদের বাড়তি সক্রিয় হতে বলেছেন। তার জন্য কলকাতা পুরসভা–সহ প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করতে নির্দেশ দিয়েছেন স্থানীয় থানার ওসিদের। সম্প্রতি নবান্নের প্রশাসনিক বৈঠকে সরকারি জমি দখল করে নেওয়ার ঘটনায় পুলিশের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং।