নিজে থেকেই ইস্তফা দিতে চেয়েছিলেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। এমনই দাবি করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তিনি যে কলকাতার পুলিশ কমিশনারের পদে আপাতত নতুন কোনও মুখ আনছেন না, তা বুঝিয়ে দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। সোমবার নবান্নে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দফতরের পর্যালোচনা বৈঠকের মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘পদত্যাগ করার জন্য কলকাতার পুলিশ কমিশনার নিজে আমার কাছে অনেকবার এসেছে। সাতদিন আগে। সামনে পুজো।'
সেই বিষয়টি আরও ব্যাখ্যা করে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা এবার আমায় বলুন। যে থাকবে, সেই লোকটাকে আইন-শৃঙ্খলা তো জানতে হবে। কোন পাড়ায় কোন পুজো হচ্ছে, পুজো কমিটিগুলি কী থিম করছে, কোথায় কী পুলিশ পোস্টিং আছে, (সেটা জানতে হবে তো)। এটা পুজোর সময়। কিছু ধৈর্য ধরলে কী মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যায়?’
কারা বিনীতের ইস্তফার দাবি তুলেছেন?
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের (স্নাতকোত্তরের দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া) ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার পরে বিনীত-সহ তাঁর পুরো কলকাতা পুলিশই প্রশ্নের মুখে পড়েছে। তথ্যপ্রমাণ লোপাট করার অভিযোগ উঠেছে। আর গত ১৪ অগস্ট গভীর রাতে যে ঘটনা ঘটেছিল, তারপরে পুলিশের উপরে প্রবল জনরোষ তৈরি হয়েছে। সেই রাতে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে তাণ্ডব চলেছিল। আর পুলিশ কার্যত দর্শক হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
সেই পরিস্থিতিতে কলকাতার পুলিশ কমিশনার পদ থেকে বিনীতের ইস্তফার দাবির স্বর জোরালো হয়ে ওঠে। সেই দাবিতে লালবাজার অভিযানও করেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। ২২ ঘণ্টা অবস্থানের পরে পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে দেখা করেছেন। লালবাজারে প্রতীকী শিরদাঁড়া উপহার দিয়ে আসেন। তারপর তাঁরা জানান, বিনীত দাবি করেছেন যে তিনি নিজে থেকে পদত্যাগ করবেন না বলে জানিয়েছেন। তবে উপরমহল থেকে সরিয়ে দিলে তাতে কোনও আপত্তি নেই।
লালবাজার অভিযানের সময়ই পদত্যাগের ইচ্ছাপ্রকাশ বিনীতের?
যদিও সোমবার মমতা জানিয়েছেন যে এক সপ্তাহ আগেই বিনীত নিজে থেকে ইস্তফা দিতে চেয়েছিলেন। নির্দিষ্টভাবে কোনও তারিখ উল্লেখ করেননি তিনি।তবে ২ সেপ্টেম্বর এবং ৩ সেপ্টেম্বর বিনীতের ইস্তফার দাবিতে লালবাজার অভিযান করেন জুনিয়র ডাক্তাররা। মুখ্যমন্ত্রী যা বলেছেন, তাতে ওই অভিযানের আশপাশের সময় নিজের পদ ছাড়তে চেয়েছিলেন বিনীত।
জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি নিয়ে মমতা
কলকাতা পুলিশ কমিশনারের পদ থেকে বিনীতকে সরানোর পাশাপাশি একাধিক পরিবর্তনের দাবি তোলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। রাজ্য সরকারের তরফে কয়েকটি দাবি পূরণও করা হয়েছে। সেই রেশ ধরে সোমবার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'আপনারা ঠিক করবেন...সবাইকে চেঞ্জ করতে হবে। যতটা পারছি, আমরা করছি। আপনি আমায় ১০টা দাবি দিতে পারেন। পাঁচটি করতে পারি। পাঁচটা নাও করতে পারি। আমি তো ইতিমধ্যে অনেকগুলো করে দিয়েছি।’