গড়িয়াহাট জোড়া খুন কাণ্ডে কেটে গিয়েছে এক সপ্তাহ। এখনও অধরা মূল অভিযুক্ত ভিকি। তবে তার মা মিঠু ও দুই সঙ্গীকে জেরা করে একের পর এক মিলেছে নয়া সূত্র। দুই অভিযুক্ত জাহির গাজি ও বাপি মণ্ডল পুলিশের জেরায় জানিয়েছে, বাড়ি সারানোর কাজে তাদের ঢেকে আনা হয়েছিল। কাজের শুরুতে দেড় হাজার এবং কাজের ফাঁকে ফাঁকে আরও টাকা মিলবে বলেছিল ভিকি। এমনকী শুরুতে মিলেও ছিল সেই টাকা। কিন্তু সামনে এসে অন্য ঘটনার সম্মুখীণ হতে হয়েছিল।
এখন ভিকির মা এবং দুই বন্ধু পুলিশের জালে। আর মূল অভিযুক্ত ভিকি হালদার এখনও পলাতক। তিনজন গ্রেফতার হলেও ভিকিকে ধরতে হিমশিম খেয়েছেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। দু’বার পুলিশের হাত ফস্কে পালাতে সক্ষম হয়েছে ভিকি। একবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমায় তার নাগাল পেয়েছিলেন তদন্তকারীরা। কিন্তু ফাঁদে পা না দিয়ে চম্পট দেয় ভিকি। আর একবার সুন্দরবন এলাকায় সে নদী পেরিয়ে সন্দেশখালি গিয়েছে খবর মিলেছিল। কিন্তু সেখানে পুলিশ পৌঁছনোর আগেই পালিয়ে যায় ভিকি।
এই জোড়া খুনে কী জানিয়েছে অভিযুক্তরা? পুলিশের জেরায় জাহির ও বাপির দাবি করেছে, সুবীর চাকির সঙ্গে কথা বলে বাড়ি সারানোর নাম করে তাদের ওই বাড়িতে ঢুকিয়েছিল মিঠু। কিন্তু সেখানে গাড়িচালক রবীন মণ্ডলকে খুন করে ভিকি। তখন রবীন চিলেকোঠার ঘরে ছিলেন। রবীনকে খুন করে ভিকি। বাকি দুজন হাত ও পা চেপে ধরে। একই পদ্ধতিতে সুবীরকেও খুন করে ভিকি। কিন্তু তারা কোনও খুন করেনি। সহযোগী হিসাবে কাজ করেছিল।
পুলিশ সূত্রে খবর, খুনের পর ট্রেন ধরে একসঙ্গে তিনজন পালিয়ে যায়। খুনের পর থেকে আর কেউ বাড়িতে ফেরেনি। তদন্তে আরও এক যুবকের হদিশ পাওয়া যাচ্ছে। খুনের ঘটনার দিন ভিকির সঙ্গে অজ্ঞাতপরিচয়ের এক যুবক দেখা করতে যায় কনস্ট্রাকশন সাইটে। কে সেই যুবক? তদন্ত চলছে। তবে জাহির ও বাপির জেরায় বলেছে, তারা এই খুনের পরিকল্পনার কিছুই জানত না। ঘটনাস্থলে এসে আর কিছু করার ছিল না। যা করতে বলেছে ভিকি সেইটুকুই তারা করেছে।
তদন্তকারীদের কাছে খবর রয়েছে, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় পরিচিত, বন্ধু এবং সেই বন্ধুদের বন্ধুর বাড়িতে পালিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে ভিকি। কোথাও একরাতের বেশি কাটাচ্ছে না। মোবাইল থাকলেও অধিকাংশ সময়ই তা বন্ধ রাখছে সে। সঞ্চিত অর্থে টান পড়েছে বলে টাকা জোগাড়ের জন্য মাঝেমধ্যে ফোন অন করে কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলছে ভিকি। এমনকী এক পরিচিতের মাধ্যমে সে আইনজীবীর সঙ্গে কথা চালাচ্ছে।