নজরুল মঞ্চ শো শেষ করে গায়ক কেকে সোজা চলে গিয়েছিলেন ধর্মতলার অভিজাত পাঁচতারা হোটেলে। সেখানেও প্রিয় গায়ককে দেখতে পেয়ে ভিড় ফ্যানেরা। তাদের সঙ্গে সেলফিও তোলেন কেকে। হোটেলের ঘরের ভিতরে ঢোকার পরেই মাথায় আঘাত লাগে কৃষ্ণকুমার কুন্নথের। ওই ঘর থেকে একটি রক্তমাখা তোয়ালে উদ্ধার করেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, নজরুল মঞ্চে শো শেষ করার পর রাত সোয়া ৯ টা নাগাদ হোটেলে ঢুকে ছিলেন কেকে। পরে ৯ টা ৪০ মিনিট নাগাদ তাকে হোটেল থেকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ২৫ মিনিট তিনি হোটেলে ছিলেন। ফলে এই পঁচিশ মিনিটে ঠিক কী কী ঘটেছিল তা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে চাইছে পুলিশ।
ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছে নিউমার্কেট থানার পুলিশ। গতকাল কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান মুরলীধর শর্মা, ডিসি সেন্ট্রাল রুপেশ কুমার এবং অন্যান্য পুলিশ আধিকারিকরা হোটেলে ঢুকে হোটেলের বেশকিছু সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছেন। সেইসঙ্গে যে ঘরটিতে কেকে ছিলেন সেই ঘর থেকে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা নমুনা সংগ্রহ করেছেন। জানা গিয়েছে, ওই ঘর থেকে একটি রক্তাক্ত তোয়ালে উদ্ধার হয়েছে।
উল্লেখ্য, নজরুল মঞ্চে শো সময় একটি সাদা তোয়ালে দিয়ে বারবার মুখ মুছতে দেখা গিয়েছিল গায়ককে। হোটেলের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে একটি সাদা তোয়ালে ঘাড়ে করে নিয়ে হোটেলের লবি দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন কেকে। ইতিমধ্যেই, পুলিশ কেকে’র মিউজিশিয়ানদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলেছে। কেকে’র ম্যানেজার রীতেশ ভাটকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পেরেছে, নজরুল মঞ্চ থেকে বেরিয়ে কেকে গাড়িতে চড়ার পরে এসি চালিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু, এসি চালানোর পরে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন গাড়ির এসির ঠাণ্ডা সহ্য করতে পারছিলেন না তিনি। তাঁর হাত পা শক্ত হয়ে যাচ্ছিল। তখন কেকে শুধু হোটেলে ফিরে যেতে চাইছিলেন। তাই তাঁকে হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে সোজা হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানান ম্যানেজার।
সিসিটিভির ফুটেজে দেখা গিয়েছে, কেকে হোটেলে ফেরার পর হোটেলের লবি দিয়ে ভালোভাবে হেঁটে যাচ্ছিলেন। কিন্তু, লিফটে ওঠার পর লিফটের রেলিং ধরে মাথা নিচু করে থাকতে দেখা গিয়েছে গায়ককে। ম্যানেজারের বক্তব্য, কেকে হোটেলের ঘরে আসার পর অসুস্থ হয়ে গিয়েছিলেন। তিনি চেয়ারে বসতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, সেই সময় তিনি চেয়ার থেকে পড়ে যান এবং তাঁর কপালে চোট লাগে। তখনই একটি তোয়ালে দিয়ে তা মুছে দেন রীতেশ। কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি ঘর থেকে দৌড়ে বেরিয়ে আসেন। কিন্তু, হোটেলের কোনও কর্মীকে না পাওয়ায় তিনি হোটেলের ম্যানেজারকে ফোন করে সাহায্য চান। তখন হোটেলের ম্যানেজার সহ অন্যান্য কর্মীরা ছুটে এসে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান। হোটেলে মাত্র ২৫ মিনিট ছিলেন কেকে। তাই এই ২৫ মিনিটকেই গুরুত্ব দিচ্ছে পুলিশ।