পুলিশের পরামর্শ, কেউ যদি মানসিক অবসাদে ভোগেন, তিনি যেন সঙ্গে সঙ্গেই ১০০ ডায়ালে ফোন করেন। তাঁর পাশে বন্ধু হয়ে দাঁড়িয়ে তাঁকে সহযোগিতা করবে পুলিশ।
কাজ নেই। অর্থিক অনটন। সংসারে স্ত্রী-সন্তানের ভরণপোষণ করতে অপারগ। একটাই পথ চোখের সামনে ভাসছিল - আত্মহত্যা। চরম সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেলেছিলেন। তবে মনে জমে থাকা গ্লানি থেকে ১০০ নম্বর ডায়াল করেন ওই যুবক। জানিয়ে দেন, ‘কাজ নেই, আমি আত্মহত্যা করতে যাচ্ছি।’ কাঁপা গলার সেই ফোন পেয়ে হকচকিয়ে যান লালবাজারের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। ফোনেই তাঁকে আশ্বস্ত করেন সংশ্লিষ্ট পুলিশকর্মী। তাঁকে ভরসা জোগানো হয়।
ধীরে ধীরে কিছুটা ধাতস্থ হতে তাঁর নাম, ঠিকানা জেনে নেওয়া হয়। আর এক মুহূর্ত দেরি করেননি লালবাজারের পুলিশ আধিকারিকরা। সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি আলিপুর থানায় জানানো হয়। তৎপরতার সঙ্গে কিছুক্ষণের মধ্যেই আলিপুর থানার পুলিশের একটি টিম ১৯ নম্বর আলিপুর রোডের ওই যুবকের বাড়িতে পৌঁছে যায়। পুলিশ কর্মীরা একচিলতে ঘরে ঢুকে দেখেন, ঘরের এক কোণায় বসে অঝোরে কেঁদে চলেছেন ওই যুবক। এগিয়ে যান পুলিশ কর্মীরা। কাছে গিয়ে বোঝানো হয় তাঁকে। আত্মঘাতী হওয়ার আগেই পুলিশ বাঁচিয়ে নেয় ওই যুবককে। পরে তাঁকে সেখান থেকে নিয়ে আসা হয় আলিপুর থানায়। চলে কাউন্সেলিংও। তাঁর পাশে থাকার আশ্বাস দেয় পুলিশ। আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন ওই ব্যক্তি। পরে তাঁকে ভাইয়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
লালবাজার সূত্রে খবর, মঙ্গলবার সকালে লালবাজার কন্ট্রোল রুমে ১০০ নম্বরে ডায়াল করে ফোন করেন এক যুবক। ফোনে ওই যুবক জানিয়েছিলেন, ‘কাজ নেই, আমি আত্মহত্যা করতে যাচ্ছি।’ এরপরই নম্বরটি ট্র্যাক করে আলিপুর থানার সাহায্যে ওই যুবককে উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর পঁয়ত্রিশের ওই যুবকের নাম ওয়াসিম খান। তিনি পেশায় গাড়ির চালক। করোনায় কঠোর বিধিনিষেধের জেরে কাজ হারিয়ে বাড়িতেই রয়েছেন। গত বছরের লকডাউন হওয়ার পর থেকেই বেকার হয়ে পড়েন তিনি। এবছরের কড়া বিধিনিষেধের সময়ও তাঁর হাতে কাজ ছিল না। জমানো সঞ্চয় যেটুকু ছিল, কিছুদিনের মধ্যেই তা ফুরিয়ে যায়। তার পর থেকেই আর্থিক অনটনে ভুগতে শুরু করেন তিনি। সংসার চালাতে না পেরে স্ত্রী ও ১২ বছরের সন্তানকে ঠাকুরপুকুরে শ্বশুরবাড়ি রেখে আসেন। এর পরেই কাজের কোনও খোঁজ না পেয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন ওয়াসিম। আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন