আরজি কর হাসপাতালে ভাঙচুরের ঘটনায় রাজ্য সরকার এবং কলকাতা পুলিশকে তুলোধোনা করল কলকাতা হাইকোর্ট। শুক্রবার হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে রাজ্য সরকারের তরফে দাবি করা হয় যে বুধবার রাতে আচমকা হাসপাতাল চত্বরে ৭,০০০ জনের মতো উন্মত্ত জনতার জমায়েত হয়ে যায়। তারপর তাণ্ডব চালানো হয়। আর সেই সওয়ালের প্রেক্ষিতে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘সাধারণত পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ থাকে। হনুমান জয়ন্তীতে একইরকম ঘটনা ঘটেছিল। যদি ৭,০০০ লোক জমায়েতের কথা থাকে, তাহলে এটা বিশ্বাস করা কঠিন যে রাজ্য পুলিশ কিছু জানত না।’ সেইসঙ্গে হাইকোর্ট মন্তব্য করে যে কথায়-কথায় ১৪৪ ধারা জারি করে দেয় পুলিশ। সেদিনও পুরো এলাকা ঘিরে দেওয়া উচিত ছিল। আরজি করে ভাঙচুরের ঘটনায় রাজ্য সরকার পুরো ব্যর্থ হয়েছে।
‘পুলিশ জানত না, বিশ্বাস করা কঠিন’
হাইকোর্ট: কী হয়েছিল?
রাজ্য: ওখানে প্রায় ৭,০০০ জন জড়ো হয়ে গিয়েছিলেন। আচমকা লোকের সংখ্যা বেড়ে গিয়েছিল। আমার কাছে ভিডিয়ো আছে। ওঁরা ব্যারিকেড ভেঙে দেন। টিয়ার গ্যাসের শেল ছোড়া হয়। ১৫ জন পুলিশ অফিসার আক্রান্ত হন। গুরুতর আহত হন ডেপুটি কমিশনার। পুলিশের গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাণ্ডব চালানো হয় জরুরি বিভাগে। তবে যেখানে অপরাধ (তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুন) ঘটেছিল, তা সুরক্ষিত আছে।
হাইকোর্ট: সাধারণত পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ থাকে। হনুমান জয়ন্তীতে একইরকম ঘটনা ঘটেছিল। যদি ৭,০০০ লোক জমায়েতের কথা থাকে, তাহলে এটা বিশ্বাস করা কঠিন যে রাজ্য পুলিশ কিছু জানত না। আপনারা কেন অনুমতি দিয়েছিলেন?
রাজ্য: কোনও অনুমতি দেওয়া হয়নি।
‘রাজ্য প্রশাসনের সম্পূর্ণ ব্যর্থতা এটা’
হাইকোর্ট: আমরা কোনও কারণ ছাড়াই ১৪৪ ধারা জারি করে দেন না। যখন আন্দোলন চলছে, তখন আপনাদের তো এলাকা ঘিরে দেওয়া উচিত ছিল।
রাজ্য: রাতে (লোকজনের আনাগোনা) হয়েছিল। হাইকোর্ট: ৭,০০০ জন হেঁটে আসতে পারেন না।
রাজ্য: একাধিক মিছিল ছিল।
হাইকোর্ট: রাজ্য প্রশাসনের সম্পূর্ণ ব্যর্থতা এটা।
রাজ্য: ওখানে পুলিশ বাহিনী মোতায়েন ছিল।
হাইকোর্ট: পুলিশ নিজেদের অফিসারকে বাঁচাতে পারে না? দুঃখজনক পরিস্থিতি। চিকিৎসকরা কীভাবে নির্ভয়ের সঙ্গে কাজ করবেন?
তাণ্ডবের ঘটনায় গ্রেফতার ১৯
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় বুধবার রাতে ‘রাস্তা দখল করো মেয়েরা’ কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছিল। তারইমধ্যে আরজি কর হাসপাতালে তাণ্ডব চালানো হয়। শুক্রবার সকালে কলকাতা পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে যে ওই ঘটনায় মোট ১৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।