হুগলি গার্লস হাইস্কুলের ছাত্রী স্নেহা। চুঁচুড়া চকবাজারের বাসিন্দা। এবারের মাধ্য়মিক পরীক্ষার্থী। জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা। স্বাভাবিকভাবে টেনশন তো কিছুটা থাকবেই। তবে স্নেহার টেনশনটা ছিল একেবারেই অন্যরকম। কারণ স্নেহার বাবা মা দুজনেই দৃষ্টিহীন। স্নেহার বাবা মার পক্ষে মেয়েকে পরীক্ষাকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার কিছুটা সমস্যা রয়েছে। তাছাড়া একলা স্নেহা যাবে কীভাবে? স্নেহার বাবা মায়ের পক্ষেও মেয়েকে সঠিক সময়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়া কার্যত অসম্ভব। আর এই সংকটে পাশে দাঁড়ালেন এক পুলিশ কর্মী।
রাজ্য পুলিশের তরফ থেকে সেই ভিডিয়ো পোস্ট করা হয়েছে। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে সেই ঘটনাকে। আসলে বাড়ির কাছেই এতদিন পড়ত স্নেহা। কিন্তু এবার সিট পড়েছে চুঁচুড়া বালিকা শিক্ষামন্দির উচ্চ বিদ্যালয়ে। এরপরই চিন্তায় পড়ে যায় স্নেহা। কারণ কীভাবে যাবে পরীক্ষা দিতে? কে তাকে পরীক্ষা দিতে নিয়ে যাবে? মূলত তার চিন্তা ছিল এটা নিয়েই। এর পাশাপাশি পরীক্ষা নিয়ে টেনশন তো আছেই। এদিকে স্নেহার মা শিবানী ও বাবা মৃত্যুঞ্জয় দুজনেই দৃষ্টিহীন। সেক্ষেত্রে তাঁদের পক্ষে ইচ্ছা থাকলেও সঠিক সময়ে সন্তানকে স্কুলে পৌঁছে দেওয়াটা সম্ভব ছিল না। এনিয়ে চিন্তায় ছিলেন স্নেহার বাবা মা। এরকম সমস্যার সময় পাশে পেলেন এক পুলিশ কর্মীকে। চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের পুলিশকর্মী সুকুমার উপাধ্য়ায়কে। তিনি আগের দিন গিয়ে দেখে এসেছিলেন কোথায় সিট পড়েছে স্নেহার। আর পরীক্ষার দিন একেবারে সঠিক সময় বাইক নিয়ে হাজির হলেন তিনি। স্নেহাকে মাধ্য়মিক পরীক্ষা দিতে নিয়ে যেতে হবে। সেই মতো তিনি হাজির হলেন বাইক নিয়ে। স্নেহাকে সঠিক সময়ে মাধ্যমিক পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে দিতে হবে। সেই মতো তিনি তাঁর ডিউটি পালন করলেন। এদিকে ওই পুলিশকর্মীকে স্নেহা মামা বলে ডাকে।
একেবারে সঠিক সময়ে তিনি স্নেহাকে মাধ্য়মিক পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে দেন। অনেকটা রাস্তা। সবটাই প্রায় ভিডিয়োতে ধরা হয়েছে। শেষে লেখা হয়েছে স্যালুট সুকুমারবাবু। রাজ্য পুলিশের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন অনেকেই।
কিন্তু তারপরেও একটা প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই উঠছে। মাধ্য়মিক পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে দিলেন পুলিশ কর্মী। এটা অত্যন্ত মহতী উদ্যোগ। অনেকেই এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। কিন্তু এর সঙ্গেই একটি প্রশ্ন উঠছে। সেটা হল হেলমেট কোথায় গেল? তিনি কেন হেলমেট নিয়ে এলেন না? যে ভিডিয়ো রাজ্যপুলিশ পোস্ট করেছে সেখানে পুলিশের মাথাতেও হেলমেট নেই। আবার মাধ্য়মিক পরীক্ষার্থীর মাথাতেও হেলমেট নেই। এনিয়ে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে।