লক্ষ্মী পুজোর বিসর্জনের দিন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটল। পরিবারের সকলে যখন বিসর্জন নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন সেই সময় বাড়িতেই আত্মঘাতী হল এক নাবালিকা। ঘটনাটি ঘটেছে কলকাতার কাশীপুর থানা এলাকায়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, আত্মঘাতী হয়েছে ওই নাবালিকা। তবে এর পিছনে অন্য কোনও রহস্য রয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। ঘটনায় শোকের ছায়া নেমেছে নাবালিকার পরিবারে। কাশীপুর থানার পুলিশ এই ঘটনায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছে।
আরও পড়ুন: পুজোয় নতুন জামা নিয়ে দুই ভাইয়ের সঙ্গে ঝগড়া, অভিমানে আত্মঘাতী দাদা
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর তেরোর ওই নাবালিকা সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়া। চিড়িয়ামোড়ের কাছে একটি স্কুলে সে পড়ত। তার বাবা পেশায় একজন রিকশা চালক। নাবালিকা তার বাবা-মা এবং বোনের সঙ্গে থাকত। মঙ্গলবার রাতে লক্ষ্মী প্রতিমার বিসর্জন ছিল। বাড়ির সকলে বিসর্জন দেখতে গিয়েছিলেন। নাবালিকাকেও বিসর্জন দেখতে যাওয়ার জন্য বলেছিলেন তার বাবা-মা। কিন্তু, নাবালিকা বাবা-মাকে জানিয়ে দেয় পরের দিন অর্থাৎ বুধবার স্কুলে তার পরীক্ষা রয়েছে। তাই তাকে প্রস্তুতি নিতে হবে। ফলে সে বিসর্জন দেখতে যেতে পারবে না। সেই মতো মেয়েকে বাড়িতে রেখেই বিসর্জন দেখতে গিয়েছিলেন বাবা-মা। কিন্তু, ফিরে আসার পরেই তারা মেয়েকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে কার্যত স্তম্ভিত হয়ে যান। তড়িঘড়ি তারা মেয়েকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এদিকে, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে কাশীপুর থানার পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নাবালিকার বোন রয়েছে। এদিন সন্ধ্যার দিকে তাদের একসঙ্গে খেলতে হয়ে গিয়েছিল। তাছাড়া, নাবালিকা সবার সঙ্গে ভালো আচরণ করত এবং সে খুব মিশুকে ছিল। তবে কী কারণে এমন কাণ্ড ঘটাল নাবালিকা? তা বুঝে উঠতে পারছেন না পরিবারের কেউই। অন্যদিকে, জানা যাচ্ছে, নাবালিকার মৃতদেহের পাশ থেকে একটি পুতুল উদ্ধার হয়েছে। সেই পুতুলের গলাতেও দড়ির ফাঁস ছিল। তা নিয়ে রহস্য তৈরি হয়েছে। ফলে খেলার ছলে নাবালিকা এরকম কাণ্ড ঘটিয়েছে? নাকি এর পেছনে অন্য কোনও রহস্য রয়েছে? তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলে এ বিষয়ে আরও সঠিকভাবে জানতে পারবে পুলিশ। আপাতত পরিবারের সদস্যদের পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে।