বিধাননগরে তোলা না পেয়ে রিভলবারের বাঁট দিয়ে মেরে এক প্রোমোটারের মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর সমরেশ চক্রবর্তীর দলবলের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, তাঁর দলবল সেখানে গিয়ে প্রোমোটার কিশোর হালদারকে মারধর করে। সেই ঘটনাই অভিযোগ পাওয়ার পরেই কাউন্সিলরের বাড়িতে হানা দেয় পুলিশ। তবে কাউন্সিলরের কোনও খোঁজখবর পাওয়া যায়নি। ঘটনায় অভিযুক্ত দুজনকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের তিন দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
আরও পড়ুন: আরজি করে বাইক পার্কিং করলেও দিতে হত তোলা, টাকা যেত সন্দীপের পকেটে, জানাল সিবিআই
জানা গিয়েছে, প্রোমোটারের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠার পরেই তার বাড়িসহ সোমবার বেশ কয়েকটি জায়গায় তল্লাশি চালায় পুলিশ। সোমবার দিনভর চলে পুলিশের সেই তল্লাশি অভিযান। শুধুমাত্র কাউন্সিলরের বাড়িতে তিন তিন বার যায় পুলিশ। তবে বাড়িতে গিয়ে কাউন্সিলরকে খুঁজে পানির তদন্তকারীরা। সেখানে শুধু রয়েছেন কাউন্সিলরের স্ত্রী। এর পাশাপাশি বেশ কয়েকবার ফোনে পুর প্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে পুলিশ। কিন্তু, ফোনেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
সমরেশ চক্রবর্তী হলেন বিধাননগর পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। জানা যাচ্ছে, ওই ওয়ার্ডের মধ্যে একটি নির্মাণ কাজ চালাচ্ছেন প্রোমোটার কিশোর হালদার। অভিযোগ, প্রথমে প্রোমোটারের কাছে ৩ লক্ষ টাকা দাবি করেছিলেন কাউন্সিলর। তবে দিনের পর দিন তার সেই দাবির পরিমাণ বেড়েই যাচ্ছিল। আক্রান্ত প্রোমোটার একটি ভিডিয়ো (সত্যতা যাচাই করেনি হিন্দুস্থান টাইমস) করেছেন। তাতে দেখা গিয়েছে, নির্মাণ কাজ নিয়ে কাউন্সিলরের সঙ্গে রীতিমতো দর কষাকষি করছেন এক ব্যক্তি। যদিও কে ভিডিয়ো বানাচ্ছেন তা দেখা যায়নি। তবে আক্রান্ত প্রোমোটার জানান, তাঁর সঙ্গে দর কষাকষি হচ্ছিল। সমরেশ শেষমেষ ১৯ লক্ষ টাকায় রাজি হলেও দর আরও কমানোর চেষ্টা করেন ওই ব্যক্তি। সেই সময় কাউন্সিলরের মুখে শোনা যায় মেয়র পারিষদ দেবরাজ চক্রবর্তীর নাম।
প্রোমোটারের দাবি, ৫০ লক্ষ টাকা তোলা দিতে রাজি না হওয়ায় কাউন্সিলর লোকজন পাঠায় তার কাছে। সেখানে এসে তারা তাকে রিভলভারের বাঁট দিয়ে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেয়। ঘটনায় কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে রবিবার বাগুইআটি থানায় অভিযোগ দায়ের করে পুলিশ। প্রোমোটারের অভিযোগ, শুভেন্দু মণ্ডল ও রমেন মণ্ডল নামে দুজন নিজেদের কাউন্সিলরের লোক পরিচয় দিয়ে তাদের মারধর করে। ঘটনায় দুজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তাদের আদালতে তোলা হলে তিন দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। তবে কাউন্সিলরের কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। এবিষয়ে বিধাননগর পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাদের সকলকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
অন্যদিকে, তোলাবাজির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মেয়র পারিষদ। তাঁর কথায়, কেউ নাম করলেই প্রমাণিত হয় না যে সে জড়িত। একইসঙ্গে তিনি জানান, কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।