ত্রিপুরায় তৃণমূলের প্রতিনিধি দল আটকানো হল। মঙ্গলবার বিজেপি শাসিত রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের পার্টি অফিসে ভাঙচুরের পর বুধবার আগরতলা যায় তৃণমূলের ছয় সদস্যের প্রতিনিধি দল। বিমানবন্দরেই তাঁদের আটকে দেওয়া হয় হলে অভিযোগ। আরও অভিযোগ, তাঁদের প্রিপেড ট্যাক্সি ধরতেও দেওয়া হয়নি, বাইরে বেরোতে চাইলেও বাধা দিয়েছে পুলিশ। ঘটনার পরেই ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তরবঙ্গ সফর শেষে দমদম বিমানবন্দরে নেমে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, সেরকম হলে তিনি নিজেই যাবেন। তাঁর কথায়, ‘দেখি কার কত দম।’
আরও পড়ুন: ত্রিপুরায় তৃণমূলের প্রতিনিধি দলকে আটকালো পুলিশ, কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন মমতা
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন সরাসরি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকেও নিশানা করেন। তাঁর কথায়, দেশে বিভেদ তৈরি করছে বিজেপি। ওরা দেশকে শেষ করে দেবে। ত্রিপুরায় তৃণমূলের টিমকে ট্যাক্সিও দেওয়া হয়নি। বাধ্য হয়ে তিনি হেঁটে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তৃণমূল সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার রাতে আগরতলায় তৃণমূলের পার্টি অফিসে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। অভিযোগের তির বিজেপির দিকে। তৃণমূলের দাবি, পুলিশের সামনেই সেই হামলা হয়, কিন্তু তারা নীরব দর্শকের ভূমিকা নেয়। ঘটনার পরপরই রাজ্য নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নেয়, পরদিনই ঘটনাস্থলে যাবে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল।
বুধবার সকালেই ত্রিপুরায় পৌঁছন ছয় সদস্যের দলটি। তাতে রয়েছেন, তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ, সাংসদ প্রতিমা মণ্ডল, সুস্মিতা দেব, বীরবাহা হাঁসদা, সুদীপ রাহা এবং যুবনেত্রী সায়নী ঘোষ। কিন্তু আগরতলা বিমানবন্দরেই তাঁদের আটকে দেয় স্থানীয় পুলিশ। অভিযোগ, আগেই চারটি গাড়ির ব্যবস্থা থাকার কথা ছিল, কিন্তু বিমানবন্দরে পৌঁছে তাঁরা জানতে পারেন একটি মাত্র গাড়ি দেওয়া হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সবাইকে একসঙ্গে যেতে হবে যা কার্যত অসম্ভব।
কুণাল ঘোষের নেতৃত্বে তৃণমূল নেতারা পুলিশের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলেও কোনও সমাধান হয়নি। এরপর তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন প্রিপেড ট্যাক্সি বা অটো ধরবেন, কিন্তু অভিযোগ, তৃণমূল পরিচয় জানার পর কাউকেই তাঁদের যান ভাড়া দিতে দেওয়া হয়নি। বাধ্য হয়ে বিমানবন্দরের বাইরে বসে প্রতিবাদে সামিল হন দলের প্রতিনিধিরা।
ঘটনার পর রাজ্য জুড়ে প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। তৃণমূল নেতৃত্বের অভিযোগ, বিজেপি প্রশাসনিক ক্ষমতা ব্যবহার করে বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করতে চাইছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হুঁশিয়ারি সেই প্রেক্ষিতেই বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি বলেন, ত্রিপুরা বারবার একই কাণ্ড করছে। আগে অভিষেকের উপর হামলা হয়েছে, সুস্মিতা দেবের গাড়ি ভাঙা হয়েছে। এবার প্রতিনিধি দলকে আটকালো। প্রয়োজনে তিনি নিজেই যাবেন।