আইআইটি খড়গপুরের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ফয়জান আহমেদের রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় কলকাতা হাইকোর্টকে সিল বন্ধ খামে রিপোর্ট জমা দিল পুলিশ। পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপারকে এই রিপোর্ট জমা দিতে বলেছিলেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। তার ভিত্তিতে মঙ্গলবার এই রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে। কলকাতা হাইকোর্ট ফয়জানের বাবা-মায়ের কাছেও এই রিপোর্টের একটি প্রতিলিপি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। সেই তাঁদের এই রিপোর্টের গোপনীয়তা বজায় রাখতে বলেছেন।
ছেলের মৃত্যুতে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ফয়জানের বাবা সেলিম আহমেদ ও রেহানা আহমেদ। হাইকোর্ট এর আগে আইআইটি খড়গপুরের ডিরেক্টর ভি কে তিওয়ারিকে হোস্টেলে র্যাগিং রুখতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল সে সম্পর্কে একটি রিপোর্ট চেয়েছিল। এরপরেই আইআইটি কর্তৃপক্ষ একটি অ্যান্টি-র্যাগিং স্কোয়াড গঠন করে। এদিন মামলার শুনানিতে তদন্তের অগ্রগতি সংক্রান্ত রিপোর্ট পেশ করে পুলিশ। আগামী ৩০ নভেম্বর এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানি হবে হাইকোর্টে।
উল্লেখ্য, ফয়জানের মৃত্যুর ঘটনায় প্রথম থেকেই পুলিশি তদন্তে অসন্তোষ প্রকাশ করে আসছে তাঁর পরিবার। তাঁদের বক্তব্য, ঠিকমতো তদন্ত করছে না পুলিশ। এই ঘটনাকে পুলিশ আত্মহত্যা বলে দাবি করলেও তা মানতে নারাজ ফয়জানের বাবা মা। অবশেষে ঘটনার ১৫ দিন পর তারা কলকাতা হাইকোর্টে দ্বারস্ত হন। ঘটনায় সিআইডি বা সিট গঠন করে তদন্তের আর্জি জানিয়েছেন ফয়জানের বাবা-মা।
অসমের তিনসুকিয়ার বাসিন্দা ফয়জানের বাবা সেলিম আহমেদ এবং মা রেহানা আহমদের বক্তব্য, এই ঘটনায় নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করছে না পুলিশ। তাদের দাবি, গত কয়েক মাসে ফয়জান যাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছে কল রেকর্ড খতিয়ে দেখে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেনি পুলিশ। শুধুমাত্র হোস্টেলের নিরাপত্তা রক্ষী এবং তার কয়েকজন বন্ধুকেই পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। আইআইটি কর্তৃপক্ষ অবসাদের কারণে ফয়জান আত্মহত্যা করেছে বলে যে দাবি করছে তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তাঁর বাবা সেলিম আহমেদ। তাঁর অভিযোগ, আইআইটিতে ফয়জান ভালোই ফল করেছিল। তারপরেও কী কারণে তার অবসাদ? সে বিষয়টি কোনওভাবেই স্পষ্ট হচ্ছে না।