তিনি প্রেমকে অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন। তাই ছেড়ে দিয়েছিলেন মেয়র পদ, বিধায়ক পদ এমনকী দলীয় পদও। সব ছেড়ে প্রেমের জোয়ারে নিজেকে ভাসমান রেখেছিলেন। তার পর পদ্মবনে বৈশাখী ঝড় তুললেও তা ছিল ক্ষণস্থায়ী। তাই আবার প্রেম। নিজের সংসার, ছেলে–মেয়ে–স্ত্রী সব ছেড়ে শুধু আলিঙ্গন করেছিলেন ভালবাসাকে। তাই রাজনীতির ময়দান থেকে তাঁর দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। কিন্তু আবার তিনি রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিক হতে চলেছেন বলে গুঞ্জন। হ্যাঁ, তিনি শোভন চট্টোপাধ্যায়। লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের অভূতপূর্ব সাফল্য আবার তাঁকে কাছে টেনে আনছে বলে সূত্রের খবর। সুতরাং সব ঠিক থাকলে শোভনকে আবার দেখা যাবে মঞ্চে।
তাঁর বিরুদ্ধে নারদ মামলা রয়েছে। কিন্তু তাতে তিনি দমে যাননি। বরং বারবার আদালত পৌঁছে সাক্ষ্য দিয়েছেন। এখন শোভন চট্টোপাধ্যায়কে একুশে জুলাইয়ের মঞ্চে দেখা যাবে বলে গুঞ্জন তৈরি হয়েছে। কারণ সম্প্রতি শোভনের বাড়িতে গিয়েছিলেন অরূপ বিশ্বাস ও কুণাল ঘোষ। তাই প্রশ্ন উঠছে, তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরছেন নাকি? এই প্রশ্ন তাঁকে সরাসরি করাও হয়েছিল। শোভন চট্টোপাধ্যায় তা শুনে বলেন, ‘কোনও রাজনৈতিক বৈঠক হয়নি। কুণাল দা আমাদের বাড়িতে আগেও এসেছেন।’ তবে কুণাল এবং অরূপের আগে আসা এবং এখন আসার মধ্যে পার্থক্য আছে। একুশে জুলাইয়ের মঞ্চে যদি শোভন চট্টোপাধ্যায়কে দেখা যায় তাহলে সেটা রাজনীতিতে বড় খবর হয়ে দাঁড়াবে।
আরও পড়ুন: ‘রাজভবনে ঘটা ঘটনাগুলির প্রেক্ষিতেই মুখ্যমন্ত্রী মন্তব্য করেছিলেন’, জবাব মমতার আইনজীবীর
হাতে আল বাকি ১৫ দিন। তারপরই ২১ জুলাই। ইতিমধ্যেই ধর্মতলা চত্বর সরেজমিনে খতিয়ে দেখেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি। এই আবহে শোভন চট্টোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করা হয়, একুশে জুলাইয়ের মঞ্চে আপনি যাবেন? জবাবে তাঁর বক্তব্য, ‘দেখুন একুশে জুলাই আমরা কেউ ভুলতে পারি না। আমরা যাঁরা পুরনো কর্মী, একুশে জুলাই উপস্থিত থাকার জন্য মন কাঁদবেই। তবে এটুকু বলতে পারি যাওয়ার মতো পরিস্থিতি হলে নিশ্চয়ই চলে যাব। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সব সময়ই তাঁর চোখ কান খোলা রাখেন। তিনি অত্যন্ত অভিজ্ঞ এবং দক্ষ নেত্রী। মমতাদি যদি আমায় কোনও দায়িত্ব দেন, তাহলে সেই নির্দেশ অমান্য করার মতো আমার ঘাড়ে মাথা নেই।’ সুতরাং একটা দায়িত্বে আসতেই পারেন শোভন চট্টোপাধ্যায়।
তবে শোভন চট্টোপাধ্যায় তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরলে বিধায়ক রত্না চট্টোপাধ্যায় এবং তাঁর বাবা মহেশতলা পুরসভার চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক দুলাল দাস কতটা মেনে নেবেন সেটা নিয়ে সন্দিহান সবপক্ষই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রিয় ‘কানন’ আবার অন্য ভূমিকায় দেখা দিতে পারেন। টিভি নাইন বাংলায় এমনই সাক্ষাৎকার দিয়েছেন শোভন। লোকসভা নির্বাচনের সময় দক্ষিণ কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী মালা রায়ের প্রচারে গিয়ে কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের প্রশংসা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সম্প্রতি হকার সমস্যা নিয়ে বিরক্ত মুখ্যমন্ত্রীর যে মেজাজ দেখা গিয়েছে সেখানে শোভন আবার প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই।