শব্দবাজিতে কান ফাটলে সেই অভিযোগ জানানোর জন্য রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কন্ট্রোল রুম চালু হচ্ছে আজ, সোমবার। কিন্তু রবিবার রাত থেকেই দেদার ফাটতে শুরু করল শব্দবাজি। আজ, সোমবার এবং আগামী কয়েকদিন শব্দবাজির মাত্রা আরও বাড়তে পারে বলে রীতিমতো উদ্বেগ তৈরি হয়েছে পরিবেশকর্মী থেকে শুরু করে সমাজের প্রবীণ নাগরিকদের মধ্যে। আজ, সোমবার নিম্নচাপের জন্য সারাদিন বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। তাই পরিবেশকর্মীরা মনে করছেন, বৃষ্টি হলে একদিক থেকে শাপে বর হবে। বাজি পুড়লেও ঝড়–বৃষ্টির জন্য একিউআই অসহনীয় পর্যায়ে হয়তো পৌঁছবে না।
নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও এত শব্দবাজি কোথা থেকে এল? কেন আদালতের রায়ের পরেও শব্দবাজি নিয়ন্ত্রণ করা গেল না? এই বিষয়ে পরিবেশকর্মীদের সংগঠন ‘সবুজ মঞ্চ’–এর সাধারণ সম্পাদক নব দত্ত বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের ব্যর্থতা। পর্ষদ প্রত্যেকবার শব্দবাজি আটকানোর বিষয়ে অনেক দাবি করে। বাস্তবে তার কোনও প্রতিফলন দেখা যায় না। এবার তো সরাসরি আদালতের নির্দেশের অবমাননা করা হল।’ এই বছর মহামারীর প্রকোপ কাটিয়ে বাজির বিক্রি অনেকটাই বেড়েছে। বিপুল পরিমাণ বাজি পোড়ালে বাতাসের মান কোথায় গিয়ে পৌঁছবে, তা নিয়ে চিন্তায় পরিবেশকর্মীরা। প্রবল বৃষ্টি হলে মানুষ বাজি পোড়াতে পারবেন না। তাই অন্যান্য বছর আতসবাজির কারণে যে অতিরিক্ত দূষণ হয়, তার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে বলেই অনেকের আশা।
ঠিক কী বলছেন রাজ্যের পরিবেশমন্ত্রী? এই বিষয়ে রাজ্যের পরিবেশমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া বলেন, ‘পুলিশ–প্রশাসন দিয়ে চেষ্টা করা হচ্ছে। আমাদের দফতর প্রতিনিয়ত পুলিশ, পুরসভার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে।’ যদিও এই বিষয়ে পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত বলেন, ‘রাজ্যে কোথায় শব্দবাজি তৈরি হচ্ছে, বাইরে থেকে কীভাবে তা রাজ্যে আসছে, এটা সারা বছর দেখা দরকার। সেটা হয় না বলেই তার ফল ভুগতে হয় সাধারণ মানুষকে। এত বছরেও কালীপুজোয় শব্দবাজির দাপট বন্ধ করা গেল না। পুলিশ–প্রশাসনের কাছে এটাই লজ্জার বিষয় হওয়া উচিত।’
উল্লেখ্য, এই বছর সবুজ বাজির উপর বেশি করে জোড় দেওয়া হয়েছে। বাজি পোড়ানোর নির্দিষ্ট সময়ও বেঁধে দেওয়া হয়েছে। সবুজ বাজিতে দূষণ খানিকটা কম হয়। বাজিতে থাকা রাসায়নিক ক্যাডমিয়াম, সীসা প্রভৃতি দূষণের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। ঝড়–বৃষ্টি হলে এই পদার্থগুলি বেশিক্ষণ বাতাসে থাকতে পারে না। তবে সেটা যদি টানা বৃষ্টি হয়, তবেই সম্ভব। সামান্য বৃষ্টিতে একিউআইয়ে বিরাট পরিবর্তন হয় না।