শীতের মরশুমেই আলুর দাম শুনে ঘাম দিতে পারে মধ্যবিত্তের। কারণ আলু ব্যবসায়ীরা ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই ধর্মঘট হলে আলুর সংকট দেখা দেবে। ফলে দাম আবার বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বাজারে এখন কেজি প্রতি আলুর দাম ৩৫ টাকা। সেটা যদি আরও বাড়ে তাহলে ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে মধ্যবিত্তদের। আলুর দাম কমাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে বাংলার আলু ভিন রাজ্যে রফতানি করার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ফলে সীমান্তে গিয়ে আলুবোঝাই ট্রাক আটকে যাচ্ছে। এই পদক্ষেপের পাল্টা এবার আলু ব্যবসায়ীরা ধর্মঘটের ডাক দিয়ে বসলেন।
আলু হিমঘর থেকে বের হলেও তা রফতানি করা যাচ্ছে না। তাই সেসব আলু পচে যেতে পারে। এমনকী সীমান্তে পাঠানো আলুবোঝাই ট্রাক পাঠানো হওয়ায় পরিবহণ খরচ লোকসানে যেতে বসেছে। তাই রাজ্য সরকারকে আলু কিনে নিতে প্রস্তাব দিয়েছিলেন আলু ব্যবসায়ীরা। কিন্তু তাতে সাড়া দেননি রাজ্য সরকার। ফলে আবার ধর্মঘটের হঁশিয়ারি দিলেন আলু ব্যবসায়ীরা। ভিন রাজ্যে আলু রফতানি নিয়ে সমস্যা না মিটলে আগামী সোমবার থেকে আবার ধর্মঘট শুরু করবেন বলে জানিয়ে দিলেন আলু ব্যবসায়ীরা। গত অগস্ট মাসেও আলু ব্যবসায়ীরা ধর্মঘট ডেকেছিলেন। তার জেরে আলুর সঙ্কট দেখা দিয়েছিল। দামও বেড়েছিল আকাশছোঁয়া। এবারও যদি আলু ব্যবসায়ীরা ধর্মঘট করেন সেক্ষেত্রে মঙ্গলবার থেকে খুচরো বাজারে আলুর সঙ্কট দেখা দিতে পারে। দাম বাড়বে আলুর।
আরও পড়ুন: ‘দিল্লি থেকে বাংলায় অবজার্ভার আসে, অবজার্ভ করতে পারেন না’, দলের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক রুদ্রনীল
কিছুদিন আগে থেকে আলুর দাম বাংলার সব বাজারে আকাশছোঁয়া হয়ে যায়। তাতে নাভিশ্বাস ওঠে মধ্যবিত্তের। দাম কমাতে মুখ্যমন্ত্রী দাওয়াই দেন। টাস্ক ফোর্স রাস্তায় নামেন। কিন্তু আলুর দাম কমেনি। তাই বাংলার আলু ভিন রাজ্যে না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তাতে চাপে পড়ে যান আলু ব্যবসায়ীরা। কারণ রফতানি বন্ধ হয়ে যায়। তাই এবার পাল্টা চাপের রাস্তা বেছে নিলেন আলু ব্যবসায়ীরা। হাতে আর একদিন আছে। এই রবিবার দিন যদি আলোচনার মাধ্যমে সমাধান না হয় তাহলে সোমবার থেকে ধর্মঘটে যাবেন আলু ব্যবসায়ীরা। আজ শনিবার হুগলির তারকেশ্বরে হিমঘর মালিকদের সংগঠনের সঙ্গে যৌথ বৈঠক শেষে আগামী সপ্তাহের শুরু থেকে রাজ্যজুড়ে ধর্মঘটের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
আলু ব্যবসায়ীরা ধর্মঘটে সামিল হলে দাম অগ্নিমূল্য হয়ে যাবে। এই বিষয়ে প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক লালু মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘রাজ্যের কৃষি বিপণনমন্ত্রী বেচারাম মান্নার নির্দেশ অনুযায়ী কিলো প্রতি ২৬ টাকা দরে হিমঘর থেকে বের করে পাঠানো হচ্ছিল। কিন্তু তাও ঝাড়খণ্ড, বিহার, ওড়িশা, ছত্তিশগড় এবং অসম সীমান্তে আলুর ট্রাক আটকে দিচ্ছে। আলুবোঝাই ট্রাকের চালকদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হচ্ছে। এই অবস্থায় প্রতিবাদে আমরা বাধ্য হয়ে সোমবার রাত থেকে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছি। আশা করছি রাজ্যের সরকার আমাদের অবস্থা বিবেচনা করে সোমবারের আগেই সদর্থক পদক্ষেপ করবে।’